কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থী বহিষ্কার; প্রতিবাদে উত্তাল সামাজিক মাধ্যম
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫২ AM , আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫২ AM

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ১০১তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ ছাড়া সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে এবং সকল আবাসিক হলসমূহ আগামী ২ মে থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা ডিভিশনের পাবলিক রিলেশনস অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহেদুজ্জামান শেখ স্বাক্ষরিত গণমাধ্যম পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি ঘটে যাওয়া দুঃখজনক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ৯৮তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সিলগালা অবস্থায় সভায় উপস্থাপন করা হয় এবং তদন্ত প্রতিবেদনটি সিন্ডিকেট কর্তৃক গ্রহণ করা হয়। উক্ত ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পাশাপাশি, তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির কাছে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করা হয়।
তবে সিন্ডিকেটের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। হল না খোলা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এর আগে রোববার (১৩ এপ্রিল) বিকেল ৩টা থেকে তারা সেখানে অবস্থান করছেন।
এছাড়াও শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তাদের দাবি, ছাত্রদল ও বহিরাগতদের হাতে মার খেয়ে উল্টো তারাই বহিষ্কৃত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠেছে কুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবিও।
শেখ মুজাহিদ নামে এক ছাত্র ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, কোপ খাইলাম, গুলি খাইলাম, মামলা খাইলাম, আবার বহিষ্কারও হইলাম। বাহ বুয়েট ভিসি!
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েম লিখেছেন, কুয়েটে ছাত্রদের উপর একদল স'ন্ত্রা'সী বাহিনী বর্বর হামলা চালায়। পুরো ক্যাম্পাস নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের রক্তে রঞ্জিত হয়। এদের ছবি, ভিডিও ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার তথ্য স্পষ্টভাবে জানা গেলেও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি; উপরন্তু আহতদের নামে উদ্দেশ্য প্রণোদিত মিথ্যা মামলা দায়ের করা হলো!
খুবই ন্যাক্কারজনকভাবে আবার কুয়েটের ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারাদেশও দেওয়া হয়েছে! এটা সম্পূর্ণ অন্যায্য ও জুলুম। এ কি তবে আসন্ন নয়া ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি?
আমরা আর কোনো ফ্যা'সিবাদের জন্ম হতে দেবো না। কুয়েটের বিবেক বর্জিত ভিসির প্রত্যক্ষ মদদ ও হস্তক্ষেপে কুয়েট ছাত্রদের উপর চাপিয়ে দেওয়া এই বেইনসাফী সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাই।
বুয়েটিয়ান পেজ থেকে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে কুয়েটের ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগ চাওয়া হয়েছে। তিনি কুয়েট জিয়া পরিষদের আহ্বায়কও ছিলেন। এজন্য ছাত্রদলের প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
প্রসঙ্গত, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে শতাধিক আহত হন। এ ঘটনার জেরে ২৫ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ও আবাসিক হলগুলো বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।