বেরোবি

ছাত্রসংসদ না থাকলেও আদায় অর্ধ কোটির বেশি; ব্যয়ের খাত জানা নেই উপাচার্যের!

বেরোবি
  © ফাইল ছবি

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) আইনে ২০০৯ সালের সংসদীয় বিধান অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের কোন বিধান নেই। কিন্তু কিন্তু রহস্যজনকভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে  ১৬ বছর ধরে ছাত্র সংসদ বাবদ অর্ধ কোটিরও বেশি টাকার ফি আদায় করছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আদিকৃত টাকা কোন খাতে ব্যয় করা হয় জানা নেই উপাচার্যের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক সূত্রে জানা যায়,২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষ স্নাতক পর্যায়ে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি আদায় করা হয়েছে ২০০ টাকা। আর দ্বিতীয় দফা স্নাতকোত্তর ভর্তির সময় আদায় করা হচ্ছে জন প্রতি ১০০ টাকা। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে রেজিস্ট্রেশনকৃত শিক্ষার্থী সংখ্যা ২০ হাজার এবং স্নাতকোত্তরে  ১৬ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। ফলে ছাত্র সংসদের নামে আদায়কৃত অর্থের পরিমাণ ইতোমধ্যে অর্ধ কোটিও বেশি ছাড়িয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক সূত্রে আরও জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জনতা ব্যাংকের লালবাগ শাখার ১৩৭৮ হিসাব নাম্বারে টাকা জমা হয়। ছাত্র সংসদের নামে তোলা টাকা অন্য কোন খাতের ব্যয় করা হয় না।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ৮ এপ্রিল জাতীয় সংসদে পাস হওয়া বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্র সংসদের কোনো বিধান রাখা হয়নি। যার কারণে নির্বাচন করতে হলে প্রথমে ছাত্র সংসদ আইনের খসড়া একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটে পাস করে তা অনুমোদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে হবে। বিধানটি বিশ্ববিদ্যালয় আইনে সংযুক্ত হলে তারপরেই ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে।

শিক্ষার্থীরা জানান, সংসদের নামে চাঁদা আদায় করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইচ্ছা মাফিক এ অর্থ ব্যয় করছেন। আদাইকৃত  চাঁদা কোন খাতে ব্যয় করা হয় তার নেই কোন সঠিক হিসাব।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি শামসুর রহমান সুমন বলেন, দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে আমরা উপাচার্যকে অবগত করেছি। আমরা কুরবানীর মধ্যে  ছাত্র সংসদের রোড ম্যাপ দেখতে চায়। এ নিয়ে কাল ক্ষেপণ করলে আমরা আবারও দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলনে নামবো। আর উপাচার্য নতুন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জন্য ছাত্রসংসদের নামে নতুন একাউন্ট খোলার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: শওকাত আলী বলেন, ছাত্র সংসদ আইন পাসের জন্য গত বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একসাথেই দরখাস্ত দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর ছাত্র সংসদ গঠনের কাজ  দ্রুতই  সম্পন্ন হবে।

কিন্তু আইন ছাড়া কিভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ছাত্র সংসদ বাবদ ফি আদায় করা হয়েছে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে কিভাবে এ ফি আদায় করা হয়েছে এবং কোন খাতে ব্যয় করা হয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে নতুন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ভর্তির পর ছাত্র সংসদের জন্য আমরা একটা নতুন একাউন্ট খুলবো। সেখানে শিক্ষার্থীদের দেওয়া ছাত্র সংসদ ফি জমা থাকবে।