ববিতে রেজিস্ট্রারের দায়িত্বে উপাচার্য, ফ্যাসিস্ট চিহ্নিত করতে হচ্ছে কমিটি
- আরিফুর রহমান, ববি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৫, ০৩:৪৯ PM , আপডেট: ০৪ মে ২০২৫, ০৩:৪৯ PM

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামকে অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট। একই সঙ্গে রেজিস্ট্রার পদে নতুন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত রেজিস্ট্রারের অতিরিক্ত দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন।
শনিবার (৩ মে) সকাল ১১টায় ঢাকাস্থ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথিশালায় অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ৮৮তম বিশেষ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকট নিরসনের লক্ষ্যে এ সভা আহ্বান করা হয়।
সভায় সিন্ডিকেট সদস্যরা অনুযায়ী অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীনকে স্বপদে পুনর্বহালের বিষয়টি আদালতের সিদ্ধান্তের উপর ন্যাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মামলায় যারা মুচলেকা দেবেন, তাদেরকে অব্যাহতি দেওয়ার কথাও সিদ্ধান্তে অন্তর্ভুক্ত হয়।
একইসঙ্গে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে যারা ‘ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার’ এর সমর্থক হিসেবে পরিচিত, তাদের চিহ্নিত করতে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম গত ১ ফেব্রুয়ারি অবসরপ্রাপ্ত হন। কিন্তু এরপরও তিনি পূর্বের মতো দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন এবং সব সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছিলেন। উপাচার্যের নির্দেশে তার একান্ত সচিব মো. মিজানুর রহমান ৩০ জানুয়ারি একটি আদেশ জারি করে তার পিআরএল স্থগিত করেন।
এর আগে, শিক্ষার্থীরা এজেন্ডাবিহীন সিন্ডিকেট সভার প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের প্রবেশদ্বারে গেট ভাঙচুরের চেষ্টা করে। এরপর প্রশাসন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এমনকি ওই সভায় অংশ না নেওয়া ও ফ্যাসিবাদের দোসর উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীনকে সিন্ডিকেট সদস্য পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এই ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রারসহ অন্যান্য কর্মকর্তার কক্ষ তালাবদ্ধ করে রাখে, যা নিয়েও থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে প্রশাসন।
উল্লেখ্য, ১৬ ফেব্রুয়ারির গেট ভাঙচুরের ঘটনায় ১৭ জন শিক্ষার্থীর নামসহ অজ্ঞাতনামা ২৫ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়, যার প্রধান সাক্ষী হিসেবে উপাচার্য শূচিতা শরমিনের নাম উল্লেখ করা হয়।
সিন্ডিকেট সভার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রাব্বানী বলেন, সিন্ডিকেটের সভায় রেজিস্ট্রারের ওই পদে উপাচার্য দায়িত্ব পালন করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তি ফিরে আসুক আমি সেটাই চাই। আমার দায়িত্ব শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কিছু পাওনার ব্যাপার ছিলো।এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে আমি কিছুদিন কাজ করেছি। সিন্ডিকেটে এটি অবহিত করে আমার বিষয়টি সমাধান করায় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিন বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সিন্ডিকেট সভার আয়োজন করা হয়।সেখানে কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। রেজিস্ট্রারকে অপসারণ করে নতুন করে নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত উপাচার্য অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া স্বপদে বহালে অধ্যাপক মুহসিন উদ্দীন আদালতে রিট করেছেন সেখানে আদালত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।