আপত্তিকর অবস্থায় আটক
রাবির সেই শিক্ষক ও ছাত্রী সাময়িক বহিষ্কার
- রাবি প্রতিনিধি:
- প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৫, ১২:০৩ PM , আপডেট: ২৪ মে ২০২৫, ১২:০৩ PM

আপত্তিকর অবস্থায় আটকের ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ ও অভিযুক্ত ছাত্রীকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩৯তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন।
উপ-উপাচার্য বলেন, "তদন্ত প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত অভিযুক্ত শিক্ষক ও ছাত্রী বিভাগের কোনো ধরনের একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না বলে সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনা অধিকতর তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।"
এর আগে, গত ২১ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের একাডেমিক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অভিযুক্ত ওই শিক্ষক ও ছাত্রীকে বিভাগের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত ১১ মে সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ৩০৭ নম্বর কক্ষ থেকে ওই শিক্ষক এবং ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তরের (এমবিএ) এক ছাত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত দুই সাংবাদিক ও দুই শিক্ষার্থী।
পরে ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে ওই শিক্ষক দাবি করেন, ভিডিও প্রকাশ না করার জন্য দুইজন ক্যাম্পাস সাংবাদিক, একজন সাবেক সহসমন্বয়ক ও একজন ছাত্র তাঁর কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলন করে ওই ছাত্রীও একই দাবি করেন। একই দিন সংবাদ সম্মেলন করে সাজ্জাদ হোসেন সজীব ও সিরাজুল ইসলাম সুমন নামের দুই সাংবাদিক দাবি করেন, তাঁরা চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নন।
যদিও অভিযোগ ওঠার পর তাঁরা চাকরি হারিয়েছেন। সজীব 'কালবেলা' ও সুমন 'খবরের কাগজ'-এর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ছিলেন। প্রতিষ্ঠান দুটি তাঁদেরকে অব্যাহতি দিয়েছে। সুমন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (রাবিসাস) সহ-সভাপতি ও সজীব যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অভিযোগ সামনে আসার পর সংগঠন থেকেও তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ওই শিক্ষক বাদী হয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে গত ২০ মে নগরীর মতিহার থানায় সাবেক সহসমন্বয়ক, দুই সাংবাদিকসহ চার শিক্ষার্থীর নামে মামলা দায়ের করেন। দুই সাংবাদিক ছাড়াও অভিযুক্ত অন্য দুইজন হলেন—আইবিএ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আতাউল্লাহ এবং আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব। টাকা দেওয়ার বিষয়ে শিক্ষক হেদায়েত উল্লাহ ও নাজমুস সাকিবের একটি কল রেকর্ডও ছড়িয়ে পড়ে।
পরে, ২১ মে ওই শিক্ষক ও ছাত্রীকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা অভিযুক্ত শিক্ষক-ছাত্রী এবং চাঁদা গ্রহণকারী চার শিক্ষার্থীর স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানান। পরদিনই সিন্ডিকেট সভায় শাস্তি পেলেন অভিযুক্ত শিক্ষক-ছাত্রী।