২৫ বছরে ‘বাঁধন’

প্রতিষ্ঠার পর থেকে সাড়ে নয় লক্ষ ব্যাগ রক্ত সরবরাহ

প্রতিষ্ঠার পর থেকে সাড়ে নয় লক্ষ ব্যাগ রক্ত সরবরাহ
২৫ বছরে ‘বাঁধন’  © মোমেন্টস ফটো

স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন ‘বাঁধন’ প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ২৫ বছরে প্রায় সাড়ে নয় লাখ ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করেছে। এছাড়া ২০ লাখ ১৭ হাজার মানুষকে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে দিয়েছে সংগঠনটি। ‘৫০ পেরিয়ে বাংলাদেশ, ২৫ এ বাঁধন, স্বেচ্ছায় রক্তদান হোক সামাজিক আন্দোলন’—প্রতিপাদ্য নিয়ে ২৫ বছর উদযাপন করছে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন বাঁধন।

রোববার (১২ জুন) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাঁধনের রজতজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক এস এম কোরবান আলী। আগামী ২৪ অক্টোবর সংগঠনটির রজতজয়ন্তী উদযাপন করছে সংগঠনটি। এ উপলক্ষে দেশব্যাপী বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, ২৫ হাজার বৃক্ষরোপণ, রক্তের প্রয়োজনে রোগীর সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘বাঁধন অ্যাপস’ তৈরি, ২৫ বারের বেশি রক্তদাতাদের সম্মাননা, বাঁধন মিলনমেলা, স্যুভেনির প্রকাশসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে কোরবান আলী বলেন, ‘একের রক্ত অন্যের জীবন, রক্তই হোক আত্মার বাঁধন’— এ স্লোগান নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ১৯৯৭ সালের ২৪ অক্টোবর যাত্রা শুরু করে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন বাঁধন। আগামী ২৪ অক্টোবর ২৫ বছর পূর্তি হচ্ছে সংগঠনটির। 

তিনি আরও বলেন, স্বেচ্ছায় রক্তদানে উদ্বুদ্ধকরণ, স্বেচ্ছায় রক্তদান এবং অন্যান্য সেবা ও সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সুস্থ সমাজ বিনির্মাণে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ দীর্ঘ সময়ে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ব্যাগ রক্তদান, ২০ লাখ ১৭ হাজার মানুষকে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে দেওয়া, করোনাকালীন প্লাজমা সাপোর্ট সেন্টারের মাধ্যমে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের ৩২২ ইউনিট প্লাজমা প্রদান, করোনায় ৭৪১টি পরিবার ও ৫৪৫ জন ব্যক্তিকে খাদ্যদ্রব্য সহায়তা ও ৫৩ জন ব্যক্তিকে নগদ অর্থ প্রদান, ৩৮৬ পরিবার ও ৫৪৫ জন ব্যক্তিকে ইফতার সামগ্রী প্রদান, বাঁধন ট্রান্সফিউশন সেন্টারের মাধ্যমে এ পর্যন্ত সর্বমোট ১৪ হাজার ৩১১ ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করাসহ দেশের বিভিন্ন দুর্যোগের সময় নানা সহায়তা কর্মসূচি গ্রহণ করে বাঁধন।

বাঁধনের বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থা তুলে ধরে কোরবান আলী বলেন, দেশের ৫৩টি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পর্যায়ের ৭৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৪০ টি ইউনিট নিয়ে কাজ করছে সংগঠনটি। বর্তমানে ২ হাজার ৪৪৩ জন সক্রিয় কর্মীসহ সাবেক কয়েক হাজার কর্মী কাজ করছে সংগঠনটিতে।

রজতজয়ন্তী উৎযাপন কমিটির আহ্বায়ক কোরবান আলী বলেন, সব সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে মানব সেবায় ২৫ বছর পার করতে চলছি আমরা বাঁধন। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে যারা সংগঠনের জন্য জীবনের মূল্যবান অতীতকে নীরবে- নিভৃতে বিসর্জন করে চলেছেন, তাদের জন্য এ মুহূর্তটির অনুভূতি ভাষায় প্রকাশের অযোগ্য। যাদের হাত ধরে সংগঠনের জন্ম ও বিকাশ তাদের বেশিরভাগের বয়সই অর্ধ-শতকের দিকে ছুটছে। রজতজয়ন্তী উদযাপনের সৌভাগ্য হয়েছে আজ আমাদের অনেকে। ফলে রজতজয়ন্তীকে কেন্দ্র করে সকলের উৎসাহের শেষ নেই।

তিনি বলেন, রজতজয়ন্তী স্মরণীয় করে রাখতে আগামী ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত ধাপে ধাপে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে। বিগত ২৫ বছর ধরে আমরা মুমূর্ষু ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি নিঃস্বার্থভাবে। আমরা মানুষের প্রয়োজনে আজীবন পাশে থাকব সেটাই রজতজয়ন্তীর অঙ্গীকার।

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাঁধনের উদ্যোক্তা মো. শাহিদুল ইসলাম রিপন, বাঁধন ফাউন্ডেশনের সভাপতি রকীব আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মীর আশাদুজ্জামান রিন্টু, বাঁধন কেন্দ্রীয় পরিষদের উপদেষ্টা আসাদুল ইসলাম আসাদ, বাঁধন কেন্দ্রীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহ নেওয়াজ, বাঁধন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জোনের সভাপতি মিনহাজ মাহমুদ হিমেল, সাধারণ সম্পাদক গালিব আহমেদ শিশির প্রমুখ।


মন্তব্য