স্ট্যাটাস দিয়ে ঢাবি ছাত্র-ছাত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা

ঢাবি
আত্মহত্যা চেষ্টা   © প্রতীকী ছবি

এক রাতেই ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের দুই শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে  ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা চেয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মাহবুব আলম তুষার। এদিকে, একই রাতে দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলে এক ছাত্রী তার ফেসবুক আইডিতে আত্মহত্যার কথা জানায়।

আত্মহত্যার চেষ্টা চালানো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী ফেসবুক পোস্টে  লিখেছেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। এটা আমার কর্মফল এবং বোকামির ফল। অনেককেই অনেকভাবে কষ্ট দিয়েছি। ঝামেলায় ফেলেছি, বিরক্ত করেছি। মাফ করে দিবেন সবাই।’

মঙ্গলবার (২১ জুন) রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ছাত্রীকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। ওই শিক্ষার্থী সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী।

জানা যায়, ফেসবুকে পোস্ট দেখার কিছু সময় পর তার বন্ধুরা বিষয়টি হল প্রশাসনের নজরে নিয়ে আসেন। তখন সে নিথর অবস্থায় ছিল। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের ওটিতে ভর্তি করানো হয়। ওটি (পেশাগত থেরাপি) দেওয়ার পর ক্যাবিনে এনে তার চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এখন তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের হল প্রশাসন জানিয়েছেন,  তার জ্ঞান ফিরেছে। কিন্তু সে অনেক গ্যাসের ট্যাবলেট খেয়েছে। এজন্য ডাক্তাররা বলছেন তাকে আইসিইউতে ভর্তি করানোর জন্য। আমরা চেষ্টা করছি সার্বক্ষণিক তার পাশে থাকার।

অপরদিকে, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা চেয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মাহবুব আলম তুষার। তিনি রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার নিজ ফেসবুক আইডি থেকে এটি পোস্ট করেন। সাথে হাতে লেখা একটা চিঠিও পোস্ট করেছেন তিনি। যেখানে নিজের মনের কষ্টগুলো লিখেছেন আরও বিশদভাবে। তবে ঢাকা বিশ্ববদ্যালয়ের কিছু বন্ধু ও সহপাঠীদের জন্য তার আত্মহত্যার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে বলে জানা গেছে।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে ওই শিক্ষার্থী লিখেছেন, "আমার মৃত্যুর জন্য কেউ কোনোভাবেই দায়ী না। নিজের ইচ্ছায় ই আমি আত্নহত্যা করছি, আমাকে কেউই প্রভাবিত করে নি। নিজের এ অবস্থার জন্য আমি নিজেই দায়ী। আমি এ পৃথিবীতে বসবাস করার যোগ্যতা রাখি না। দুনিয়ার সবগুলা মানুষকে অনেক জ্বালাইছি, আমি চাই না আল্লাহ আমাকে এ সুযোগ আবার দেন।"

"আমি অনেকগুলা ঘুমের ট্যাবলেট খাইছি, আমি কোথায় আছি কাউকে বলি নাই। তাও কেউ আমার খোঁজ কোনোভাবে জানলেও আমাকে হসপিটালে না নেয়ার অনুরোধ করছি। আমার মতো দুই-একটা পাগল পৃথিবীতে না থাকলে পৃথিবীর কারো কোনো ক্ষতি হবে না।"

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, তুষারের লোকেশন ট্র‍্যাক করে তাকে ফকিরাপুল হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং তার চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাকে প্রয়োজনীয়  চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।