জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ছাড়া পেলেন ঢাবি ছাত্র
- মোমেন্টস রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২২, ০৪:৪৬ PM , আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০২২, ০৪:৫৬ PM

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে বিভাগের মেসেঞ্জার গ্রুপে একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে একজন শিক্ষার্থীকে ‘জঙ্গি’ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ দিয়েছেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. বিল্লাল হোসেন। এ অভিযোগে তাকে থানায় দেয় হল প্রশাসন। যদিও তদন্ত শেষে নিরাপরাধ প্রমাণ পাওয়ায় ওই শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
ওই শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসে নিয়ে ফেরার সময় ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার তিন নেতা মারধরের শিকার হয়েছেন। মারধরের জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদ। ছাত্র অধিকার পরিষদের ভাষ্যমতে, আজ শুক্রবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদসংলগ্ন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির সামনের ফুটপাতে সংগঠনের তিন নেতা মারধরের শিকার হন।
মারধরের শিকার ব্যক্তিরা হলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার দপ্তর সম্পাদক সালেহউদ্দিন সিফাত, অর্থ সম্পাদক আহনাফ সাঈদ খান ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সম্পাদক আবদুল কাদের। তাঁদের মধ্যে সিফাত ও আহনাফকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার এক নেতা বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল কর্তৃপক্ষ মেফতাহুল মারুফ নামের এক ছাত্রকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে শাহবাগ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। মেফতাহুলকে মুক্ত করতে আজ শাহবাগ থানায় যান ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার কয়েক নেতা। তাঁকে থানা থেকে মুক্ত করে ফেরার পথে তাঁরা হামলার শিকার হন।
২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে ছাত্রলীগের কর্মসূচি নিয়ে ফেসবুকের মেসেঞ্জার গ্রুপে সমালোচনা করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থী মেফতাহুল। গতকাল মধ্যরাতে হল কর্তৃপক্ষ মেফতাহুলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড ও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনে তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করে।
ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা বলেছেন, আজ দুপুরের দিকে শাহবাগ থানা থেকে হেঁটে টিএসসির দিকে যাচ্ছিলেন সিফাত, আহনাফ ও কাদের। মোটরসাইকেলে করে তাঁদের অনুসরণ করছিলেন কবি জসীমউদদীন হল শাখা ছাত্রলীগের একদল কর্মী। জাতীয় কবির সমাধিসংলগ্ন ফুটপাতে ছাত্রলীগের ওই কর্মীরা মোটরসাইকেল থেকে নেমে সিফাত, আহনাফ ও কাদেরের ওপর হামলা করেন। মাজহার নামের এক ছাত্রলীগ কর্মী এই মারধরে নেতৃত্ব দেন।
এর আগে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১৪তম ব্যাচের অফিশিয়াল নোটিশ গ্রুপে (মেসেঞ্জার) মেফতাহুল মারুফ একটি মন্তব্য লিখে মেসেজ দেন। মারুফ সেখানে লেখেন, ‘সিরিজ বোমা হামলা চালাইছে (চালিয়েছে) জামায়াতুল মুজাহিদীন নামে একটা জঙ্গি সংগঠন, বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে। সেই সময় ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামায়াত। এই ক্ষমতায় থাকার জন্য যদি দায়ী তারা হয় তাহলে ২০০৮-বর্তমানে গুলশানসহ সব জঙ্গি হামলার জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ।’
মারুফের সেই মেসেজের স্কিনশট নিয়ে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরপর মোবাইল ফোন চেক করে হল প্রভোস্টের হাতে তুলে দেন তিনি। আর এই একটা মেসেজের ভিত্তিতেই প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয় মারুফকে।