ঢাবিতে একদল শিক্ষার্থীর মানববন্ধন
ছোট পোশাক নারীকে বিজ্ঞানী বানায় না, পণ্য বানায়
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২২, ০৪:৩২ PM , আপডেট: ২৫ আগস্ট ২০২২, ০৫:০১ PM

নরসিংদীর রেলওয়ে স্টেশনে স্লিভলেস টপস পরার কারণে এক নারীকে হেনস্তার অভিযোগে আটক নারীর জামিন শুনানিতে হাইকোর্টে একজন বিচারক যে মন্তব্য করেছেন, তার প্রতি সমর্থন জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন ঢাবির একদল শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ মানববন্ধন কর্মসূচি করেন তারা। এসময় শিক্ষার্থীরা পোশাকের নামে পশ্চিমা ‘অপসংস্কৃতি’ আমদানিকারকদের আইনের আওতায় এনে বিচারেরও দাবি করেন। মানববন্ধন থেকে ‘দেশীয় মূল্যবোধবিরোধী’ পোশাকের বিরুদ্ধে ‘সোচ্চার’ হওয়ায় উচ্চ আদালতকে অভিবাদন ও স্যালুটও জানানো হয় এই কর্মসূচিতে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘দেশীয় মূল্যবোধবিরোধী সংস্কৃতি গ্রহণযোগ্য নয়’, ‘পোশাকের স্বাধীনতার নামে পাবলিক নুইসেন্স বন্ধ হোক’, ‘ছোট পোশাক নারীকে বিজ্ঞানী বানায় না, পণ্য বানায়’ ইত্যাদি লেখাসংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
মানববন্ধনে অণুজীব বিজ্ঞানের রবিউল করিম বলেন, ‘পোশাকের স্বাধীনতার নামে বর্তমানে আমাদের সমাজে যা হচ্ছে তা খুবই উদ্বেগজনক বিষয়। এ পরিস্থিতিতে উচ্চ আদালতের এত সুন্দর ও গঠনমূলক পর্যবেক্ষণ আমাদের সমাজের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সংরক্ষণে শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে।’
অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মুহিউদ্দিন রাহাত বলেন, ‘বাকস্বাধীনতার অর্থ যেমন অন্যকে গালি দেয়া নয়, ঠিক তেমনি পোশাকের স্বাধীনতার অর্থ অন্যকে বিরক্ত করা নয়। পোশাকের স্বাধীনতার নামে এমন পোশাক পরা কখনই ঠিক না, যা পাবলিক নুইসেন্স বা গণ-উৎপাত বা বিরক্তি তৈরি করে। পাবলিক নুইসেন্স এক ধরনের ক্রাইম।’
মানববন্ধনে আরবি বিভাগের ফজলুল আলম বলেন, ‘পাবলিক প্লেসে পোশাক স্বাধীনতার আড়ালে অনেকের মধ্যে বিপরীত লিঙ্গকে সিডিউস (যৌন প্ররোচিত) করার চেষ্টা দেখা যায়। পাবলিক প্লেসে কাউকে সেক্সুয়ালি সিডিউস করা মানসিক নির্যাতনের শামিল। একজনকে মানসিক নির্যাতনের অধিকার অবশ্যই অন্যজনকে দেয়া হয়নি।’
এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রাইভেট আর পাবলিক প্লেসের ড্রেস কখনও এক না। অনেকে পোশাকের স্বাধীনতার নামে পশ্চিমা অপসংস্কৃতি আমদানি করে পাবলিক প্লেসে মানুষকে কষ্ট দেয়, এটা অবশ্যই অন্যায়। সে তার বাড়িতে সেই স্বাধীনতা পালন করুক, পাবলিক প্লেসে সবার মূল্যবোধ মেনেই তাকে চলতে হবে: মানববন্ধনে ঢাবি শিক্ষাার্থী
আরবি বিভাগের ফজলুল আলম বলেন, ‘পাবলিক প্লেসে পোশাক স্বাধীনতার আড়ালে অনেকের মধ্যে বিপরীত লিঙ্গকে সিডিউস (যৌন প্ররোচিত) করার চেষ্টা দেখা যায়। পাবলিক প্লেসে কাউকে সেক্সুয়ালি সিডিউস করা মানসিক নির্যাতনের শামিল। একজনকে মানসিক নির্যাতনের অধিকার অবশ্যই অন্যজনকে দেয়া হয়নি।’
দর্শন বিভাগের রেহানা রাহী বলেন, ‘সংস্কৃতি অবশ্যই পরিবর্তনশীল। কিন্তু আমরা যে সংস্কৃতি গ্রহণ করব, সেটা অবশ্যই আমাদের দেশীয় মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। আজকাল পোশাকের স্বাধীনতার নামে যে পশ্চিমা অপসংস্কৃতি আমদানি করা হচ্ছে, তা আমাদের দেশীয় সংস্কৃতিকে ধ্বংস করছে। এটা এক ধরনের কালচারাল টেররিজম।’
এর আগে নরসিংদী রেলস্টেশনে পোশাকের জন্য তরুণীকে হেনস্তার প্রসঙ্গ নিয়ে হাইকোর্ট প্রশ্ন রেখেছিলেন, সভ্য দেশে এমন পোশাক পরে রেলস্টেশনে যাওয়া যায় কি না। আদালত আরো বলেছিলেন, ‘(ওই তরুণী) প্ল্যাটফর্মে আপত্তিকর অবস্থায় ছিল, সিডিতে দেখা যায়।