চবিতেও স্বপ্নভঙ্গ বেলায়েতের

স্বপ্ন
চবিতেও স্বপ্নভঙ্গ বেলায়েতের  © ফাইল ফটো

এবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও কৃতকার্য হতে পারেননি বেলায়েত শেখ। উচ্চশিক্ষার স্বপ্নও অধরা রয়ে গেল ৫৫ বছর বয়সী বেলায়েতের। এর আগে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের আশায় ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলেন ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগরসহ একাধিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু কোথায়ও কৃতকার্য হতে পারেননি তিনি।

গত ২২ আগস্ট বেলায়েত শেখ ডি ইউনিটে পরীক্ষা দেন। এতে তিনি অকৃতকার্য হয়েছেন। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ও অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

রোববার বেলায়েত শেখ একটি জাতীয় দৈনিককে বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন এবারের মতো তাঁর শেষ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ই তাঁর ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শেষ ভর্তি পরীক্ষা ছিল। আগামী বছর যে বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকবে, সেখানে তিনি ভর্তি পরীক্ষা দেবেন।

বেলায়েত শেখ বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার মতো অর্থ তাঁর কাছে নেই। কেউ আর্থিক সহায়তা করলে তিনি এ বছরই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন। মরার আগে তাঁর শেষ ইচ্ছা তিনি উচ্চশিক্ষা নেবেন। পরিবারের কেউ উচ্চশিক্ষা নিতে পারেননি, এটাই তাঁর আক্ষেপ।

১৯৬৮ সালে জন্ম নেওয়া বেলায়েত শেখের ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি ছিল প্রবল আগ্রহ। ১৯৮৩ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থী দেওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু সে সময় বাবা গুরুতর অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় সংসারের হাল ধরতে হয়েছে তাকে। পরে আর পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। 

২০১৭ সালে নবম শ্রেণিতে ঢাকার বাসাবোর দারুল ইসলাম আলিম মাদরাসায় পড়ালেখা শুরু করেন। ২০১৯ সালে ৫২ বছর বয়সে এসএসসি পরীক্ষা দেন এবং জিপিএ ৪.৪৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। ২০২২ সালে রামপুরার মহানগর কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ ৪.৫৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি।

নিজের হতাশা এবং আক্ষেপের জায়গা থেকে বেলায়েত বলেন, সংসারের হাল ধরতে গিয়ে যেহেতু নিজে পড়তে পারিনি। তাই চেয়েছিলাম ভাইদের লেখাপড়া করিয়ে উচ্চশিক্ষিত করবো। কিন্তু সেটাও পারিনি। এরপর নিজের সন্তানদের পড়াতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেক্ষেত্রেও হয়েছি ব্যর্থ। বড় ছেলে অনার্সে দুই সেমিস্টারের পর আর পড়েনি। মেয়েটা মেধাবী ছিল। ভেবেছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবো। কিন্তু সেটাও পারিনি। পরে নিজের ক্ষোভ থেকেই আমি পড়ালেখা শুরু করি।