প্রশাসনিক ভবনে হয়রানি বন্ধে ফের ঢাবি শিক্ষার্থীর অবস্থান

ঢাবি
  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রশাসনিক ভবনে বিভিন্ন ধরনের হয়রানি বন্ধ সহ সব ধরনের কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশনের দাবিতে ফের অবস্থান নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী হাসনাত আব্দুল্লাহ। বোরবার (১৮ সেপ্টেম্বর) প্রশাসনিক ভবনের (রেজিস্ট্রার বিল্ডিং) সামনে অবস্থান নেন তিনি।

এর আগে একই দাবিতে গত ৩০ আগস্ট অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তিনি। ওই দিন অবস্থান কর্মসূচি শেষে আটটি দাবি লেখা স্মারকলিপি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের কাছে জমা দেন ঢাবির ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী হাসনাত আব্দুল্লাহ।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, সকাল ৯টায় অফিস টাইম হলেও ৯টা ৪০ মিনিটে রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে অনুপস্থিত। সেই ছবি তুলতে গেলে রবিবার আমাকে বাধা দেওয়া হয়। রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের ছবি তোলার আগে নাকি কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। এই অনিয়মের শৃঙ্খলা ভাঙতে হবে। আজ থেকে আমার টানা অবস্থান কর্মসূচি চলবে।

হাসনাত আব্দুল্লাহ আরো জানান, আগেরবার অবস্থান নিয়ে দাবি আদায়ে তিনি যে সময় বেঁধে দিয়েছিলেন, তা শেষ হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ কারণে আবারও অবস্থান নিয়েছেন তিনি। আট দফা দাবির বিষয়ে কতৃপক্ষ দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে। দাবিগুলোর বিষয়ে ১০ দিনের মধ্যে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল স্মারকলিপিতে।

সমস্যাগুলো সমাধানকল্পে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৮ দফা দাবি পেশ করেন হাসনাত। দাবিগুলো হচ্ছে-

১। শিক্ষার্থীদের হয়রানি নিরসনের জন্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে শিক্ষক ও ছাত্র প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অভিযোগ সেল গঠন করতে হবে। যেখানে সেবাগ্রহীতারা সুনির্দিষ্ট প্রমাণাদির ভিত্তিতে অভিযোগ জানাতে পারবেন।

২। প্রশাসনিক সব কার্যক্রম অনতিবিলম্বে ডিজিটাইজড করতে হবে।

৩। নিরাপত্তা ও হারিয়ে যাওয়া কাগজপত্র তদন্তের স্বার্থে অফিসগুলোর অভ্যন্তরে প্রতিটি রুমে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।

৪। প্রশাসনিক ভবনে অফিসগুলোর প্রবেশদ্বারে ডিজিটাল ডিসপ্লে স্থাপন করতে হবে। ডিসপ্লেতে অফিসগুলোর নাম, কক্ষ নম্বর ও সেখানে প্রদত্ত সেবার বিবরণী, কর্তব্যরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নাম ও ছবিসহ প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদর্শন করতে হবে।

৫। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য স্বাস্থ্যকর ও সুন্দর কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনিক ভবনের ক্যান্টিনেরও সংস্কার করতে হবে।

৬। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আধুনিক সাচিবিক বিদ্যা, পেশাদারিত্ব, মানুষিক ও আচরণগত প্রশিক্ষণ আইন করে বাধ্যতামূলক করতে হবে। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত মানসিক সেবা প্রদানকারী বিভাগ ও সেন্টারগুলোর শরণাপন্ন হতে হবে।

৭। অফিস চলাকালীন প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক কিংবা রাজনৈতিক কোনো কাজেই লিপ্ত থাকতে পারবে না। সে নিরিখে প্রশাসনিক ভবনের অভ্যন্তরে অবস্থিত কর্মচারী ইউনিয়ন অফিস বাধ্যতামূলকভাবে তাদের ক্লাবগুলোতে স্থানান্তর নিশ্চিত করতে হবে।

৮। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচনকালীন প্রচারণা পরিবেশ বান্ধব করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা পরিবেশ বজায় রাখতে, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য হানিকর ও পরিবেশ বিপর্যয়কারী অপ্রয়োজনীয় পোস্টার লিফলেট ও ব্যানার ব্যবহার আইন করে নিষিদ্ধ করতে হবে।