তেঁতুলিয়া শিশুস্বর্গের ১৪ বছরে পদার্পণে শীতের হুডি উপহার, হাজারো শিশুর মুখে হাসি

শিশুস্বর্গ
শিশুস্বর্গ কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপহার প্রত্যাশী শিশুদের একাংশ   © টিবিএম ফটো

হাজার শিশুর মুখে হাসি ফুটালো পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় জাবিয়ানদের শিশুস্বর্গ ফাউন্ডেশন। প্রতি বছরের ন্যায় এবার শীতেও সীমান্তের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কোমলমতি শিশুদের উপহার দেয়া হয়েছে শীতের উপহার নতুন জামা হুডি। সেই সাথে দেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে হয়ে গেল এক মিলনমেলা।

শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) বিকেলে শিশুস্বর্গ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে পঞ্চগঞ্জ জেলার তেঁতুলিয়ার সদরের দর্জিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিশুদের শীতের নতুন জামা হিসেবে হুডি তুলে দেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার সাবিরুল ইসলাম বিপ্লব।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব কায়কোবাদ হোসেন, জেলা প্রশাসক মো.জহুরুল ইসলাম, পরিবেশ অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব মো.আবু তাহের, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সফিকুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা, পঞ্চগড় মকবুলার রহমান সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো.দেলোয়ার হোসেন, কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আব্দুল লতিফ তারিন, শিশুস্বর্গের পরিচালক কবীর আকন্দসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

আয়োজনটিতে উপস্থাপনা করেন খন্দকার শামসুজ্জোহা এবং প্রধান সভাপতিত্ব করেন সাবেক সচিব কায়কোবাদ হোসেন। এছাড়া বিশেষ অতিথির আসনে বসেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম।  

প্রায় দেড় হাজার শিশুকে শীতের জামা হিসেবে হুডি উপহার দেয়া হয়। হুডি পেয়ে শিশুদের মুখে ফুটে উঠে হাসির ঝিলিক। সন্ধ্যায় বসে জাবিয়ানদের মিলন মেলা ও বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন। অনুষ্ঠান উপভোগ করতে ছুটে আসেন হাজার দর্শক।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সাল থেকে দেশের উত্তর সীমান্তের অবহেলিত, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে কাজ করে আসছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের দ্বারা গঠিত 'শিশুস্বর্গ ফাউন্ডেশন'। শিশুস্বর্গ প্রতিষ্ঠা করেন জাবিয়ান কবীর আহম্মেদ আকন্দ। তার হাত ধরেই শিশুস্বর্গ এ বছর চৌদ্দ বছরে পা দিয়েছে। এই চৌদ্দ বছরে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কয়েকটি গ্রামের ঝরে পড়া সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে শিক্ষাবৃত্তি দিয়ে আসছেন তিনি।  শিশুস্বর্গ ফাউন্ডেশনের শিক্ষাবৃত্তিতে ৬৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৫ জন শিক্ষার্থী দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছে। অনেকে বিদ্যাপাঠ শেষ করে প্রবেশ করেছে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে।

এছাড়া প্রতি শীত ও ঈদে শিশুদের নতুন জামা উপহার, স্বল্প শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থান, নারীদের স্বনির্ভরতা গড়ে তুলতে প্রশিক্ষন, শিক্ষার্থীদের আইটি প্রশিক্ষণ, মাধ্যমিক স্কুল হিসেবে রওশন আরা মেমোরিয়াল শিশুস্বর্গ বিদ্যালয় চালু, পাঠাগার, নারী উন্নয়ন প্রশিক্ষণ চালু করেছে শিশুস্বর্গ ফাউন্ডেশন। আগামীতে প্রতিষ্ঠানটি সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিরাপদ ঠিকানা সৃষ্টি করতে ‘শিশু আশ্রম’ ও 'শিশু হাসপাতাল' গড়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।