করোনাকালে হাজারো দাফনে নেতৃত্ব দেওয়া মুফতি শহিদুল ইসলামের মৃত্যু

করোনা
মুফতি শহিদুল ইসলাম  © সংগৃহীত

২০২০ সাল। করোনাভাইরাস তখন বিশ্বব্যাপী এক আতঙ্কের নাম। মা-বাবার লাশ হাসপাতালে রেখে সন্তানের লাপাত্তা হওয়া, গোরখোদকদের কবরস্থান ছেড়ে পালিয়ে যাওয়াসহ হাজারও নিষ্ঠুরতার সাক্ষী এই করোনাকাল। ভাইরাসটি এখন পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছে ৬৭ লাখের বেশি মানুষের প্রাণ। যদিও মহামারি কোভিডের রেশ এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি, তবে অনেকটাই কমে এসেছে।

ঠিক এমন একটি সময় আল মারকাজুল ইসলামী নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এগিয়ে আসে লাশের জানাজা ও দাফনে। করোনাকালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৬ হাজারেরও বেশি করোনায় মারা যাওয়া লাশ দাফন করে সংগঠনটি।আর এ কাজের নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুফতি শহিদুল ইসলাম। 

আজ শুক্রবার বাদ জুমা রাজধানীর বাইতুল মোকাররমে সেই মানুষটির জানাজা পড়ানো হয়। কেরানীগঞ্জে করা হবে দাফন।

জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে মানিকগঞ্জ সদরের একটি বাসায় মুফতি শহিদুল ইসলাম (৬৩) বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

প্রতিষ্ঠানটির সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান মামুন জানান, মানিকগঞ্জ থেকে আজ শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) সকালেই লাশ আনা হয় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আল মারকাজুল ইসলামীর কার্যালয়ে। এ সময় কার্যালয়ে তার ভক্ত ও অনুসারীদের উপস্থিতিতে তৈরি হয় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য। তারপর লাশটি ধোয়া হয়। সেখান থেকে নেওয়া হয় দেশের জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররমে।

এ মসজিদে বাদ জুমা জানাজা পড়ানো হয়। জানাজা শেষে মুফতি শহিদুলের লাশ দাফনের উদ্দেশে খাটিয়ায় করে নেওয়া হয় কেরানীগঞ্জের জামিয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে।

আরও পড়ুন: গাজায় আবারো ইসরায়েলি বিমান হামলা

এর আগে সকালে আব্দুর রহমান মামুন বলেন, ‘মানিকগঞ্জ সদরে মুফতি শহিদুল ইসলামের শ্বশুরবাড়ি। সেখানে তিনি দুটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। গত বুধবার তিনি সেখানে যান। গতকাল সন্ধ্যায়ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এক পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে মারা যান। তিনি নানাবিধ রোগে আক্রান্ত ছিলেন।’

আব্দুর রহমান বলেন, ‘সর্বশেষ গত দুই বছরে তিনি একাধিকবার মাইনর স্ট্রোক করেছিলেন। মস্তিষ্কের সমস্যা ছিল। এ ছাড়া তিনি নানাবিধ রোগে আক্রান্ত ছিলেন। বলা যেতে পারে, তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে মারা গেছেন।’

মুফতি শহিদুল ইসলাম ১৯৮৮ সালে আল মারকাজুল ইসলামী নামের প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০২ সালে নড়াইল-২ আসনের উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।  বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির ছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ গণসেবা আন্দোলন নামের একটি রাজনৈতিক দল।