গাজীপুরে উদ্বোধনের অপেক্ষায় জেলা ও সাবরেজিস্ট্রি কার্যালয়
- মোঃ আব্দুস সালাম গাজীপুর প্রতিনিধি:
- প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:০৭ AM , আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:০৭ AM

গাজীপুরে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত জেলা রেজিস্ট্রার ও সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়টির নির্মাণকাজ শেষ হলেও দীর্ঘদিন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে।
এদিকে বছরের পর বছর ভাড়া করা দুইটি ভবনে জেলা রেজিস্ট্রার ও দুইটি সাবরেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম চালানো হলেও কেবল উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা নতুন ভবনটিতে স্থানান্তর হয়নি এ দুইটি গুরুত্বপূর্ণ অফিস। ভাড়া করা ভবনে নষ্ট হচ্ছে দলিল, বালাম ও ইনডেক্সসহ গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। জানা গেছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় জেলা রেজিস্ট্রি ও সাবরেজিস্ট্রি অফিস নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়) আওতায় ২০১৭ সালে শুরু করা হয় নতুন ভবন নির্মাণকাজ। গত বছরের অক্টোবর মাসে এটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। ভবনটি নির্মাণ করতে সরকারের ব্যয় হয় প্রায় ৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। গাজীপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী স্বপন চাকমা গত বছর ২৬ অক্টোবর জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর চিঠি দিয়ে ভবনটি বুঝে নেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু চার মাসেও বুঝে না নেওয়ায় ভবনটি হস্তান্তর করা যাচ্ছে না।
এদিকে সরকার রেজিস্ট্রি অফিসের জন্য নতুন ভবন তৈরি করে দিলেও এখনো ভবনটিতে কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। শহরের উত্তর ছায়াবিথী এলাকায় ভাড়া করা ভবনে দ্বিতীয় যুগ্ম সাবরেজিস্ট্রি অফিসে সাধারণ মানুষের জমির গুরুত্বপূর্ণ দলিল, বালাম ও ইনডেক্স রেকর্ডপত্র সুষ্ঠুভাবে সংরক্ষণের অভাবে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে নষ্ট হচ্ছে। অফিসের রেকর্ড কিপার, দলিল লেখক ও নকলনবিশরা জানান, বর্তমান অফিসটিতে রাখা রেকর্ডপত্র এবং বালাম বইয়ের পাতা একটি আরেকটির সঙ্গে লেগে যাচ্ছে। বালাম বই খুলতে গেলে পাতা ছিঁড়ে যায়। বালামের লেখা এবং ইনডেক্সের লেখা লেপ্টে গিয়ে অস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ নকল চাইলে তা দিতে হিমশিম খেতে হয়। এভাবে চলতে থাকলে কিছু দিনের মধ্যে সব রেকর্ডপত্র নষ্ট হয়ে যাবে।
জমি রেজিস্ট্রি করতে আসা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুরের জনসংখ্যার আধিক্য এবং সেবার কথা বিবেচনা করে বৃহত্তর গাজীপুর সদর উপজেলায় যুগ্ম সাবরেজিস্ট্রি অফিস নামে আরেকটি অফিসের কার্যক্রম শুরু করা হয়। দুইটি সাবরেজিস্ট্রি অফিসের মধ্যে সাবেক গাজীপুর পৌরসভা, সাবেক কাউলতিয়া ইউনিয়ন, বাড়িয়া, পিরুজালী, ভাওয়ালগড় ও মির্জাপুর ইউনিয়নের জমি রেজিস্ট্রি করা হয়। আর যুগ্ম সাবরেজিস্ট্রি অফিসে মহানগরীর সাবেক বাসন, কোনাবাড়ী ও কাশিমপুর ইউনিয়নের জমি রেজিস্ট্রি করা হয়। তবে যুগ্ম অফিস প্রতিষ্ঠার পর একজন সাবরেজিস্ট্রার দিয়েই চলে আসছে দুটি অফিসের কার্যক্রম। যুগ্ম সাবরেজিস্ট্রি অফিসে নিজস্ব কোনো জনবল না থাকায় এক অফিসের জনবল দিয়ে চলছে দুইটি অফিসের কার্যক্রম। এতে সেবাগ্রহীতারা পড়ছেন চরম ভোগান্তিতে। একজন সাবরেজিস্ট্রার সপ্তাহে দুই দিন ও তিন দিন করে দুইটি অফিসে দায়িত্ব পালন করেন। সাধারণ সেবাগ্রহীতারা ব্যস্ততম রেলক্রসিং পার হয়ে এক কিলোমিটার দূরে অপর একটি অফিসে যাতায়াত করতেও তাদের অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
গাজীপুর সদর দলিল লেখক ও ভেন্ডার কল্যাণ সমিতির সভাপতি মজিবুর রহমান জানান, গাজীপুর জেলা রেজিস্ট্রার ও দুইটি সাবরেজিস্ট্রি অফিস শুরু থেকেই ভাড়া করা ভবনে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। ঐ ভবন দুইটিতে প্রায় ৪০ হাজার বালাম বই, ইনডেক্সসহ নানা রেকর্ডপত্র রয়েছে। উপযুক্ত পরিবেশে এগুলো সংরক্ষণ করা না হলে এ রেকর্ডগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে গাজীপুর জেলা রেজিস্ট্রার অহিদুল ইসলাম বলেন, জেলা রেজিস্ট্রি ও সাবরেজিস্ট্রি অফিসের জন্য নতুন ভবনটিতে স্থানান্তর এবং ভবনটি উদ্বোধনের জন্য বাংলাদেশ নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক (আইজিআর) বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। অনুমতি পেলে যে কোনো সময় নবনির্মিত ভবনে কার্যক্রম করা সম্ভব হবে।