আস্ত নয়, বিক্রি হচ্ছে টুকরো মুরগির মাংস 

মুরগি
  © সংগৃহীত

চট্টগ্রামের চকবাজারের একটি দোকানে বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৩৫ টাকায়। সে হিসেবে দেড় কেজি ওজনের একটি মুরগির দাম পড়ছে ৩৫০ টাকা। এতে নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারের পক্ষে মুরগি কেনা অসম্ভব হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় চট্টগ্রামের চকবাজার কাঁচাবাজারে মুরগি বিক্রির প্রতিষ্ঠান সেলিম পোল্ট্রি শপ নিয়েছে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। আস্ত মুরগি বিক্রির পাশাপাশি এ দোকানে একটি মুরগিকে চার ভাগ করেও বিক্রি করা হচ্ছে।

দেখা গেছে, চকবাজার কাঁচাবাজারের সেলিম পোল্ট্রি শপের সামনে ঝুলছে নোটিশ। এতে লেখা আছে, ‘এখানে মুরগির মাংস টুকরা হিসেবেও বিক্রি করা হয়’।

দোকানি মো. আবদুল কাদের বলেন, ‘যে হারে নিত্যপণ্যের সঙ্গে মুরগির দাম বাড়ছে সে কারণে অনেকের পক্ষে কেনা সম্ভব হচ্ছে না। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে আমরা পিস হিসেবেও মুরগি বিক্রি করছি। একটি মুরগি জবাই করে সেটিকে চারভাগ করে চার জনের কাছেও বিক্রি করছি। দেড় কেজি ওজনের একটি মুরগি ৩৫২ টাকা হলে প্রতি পিসের দাম পড়বে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। এ টাকা দিয়ে যে কেউ মুরগি কিনতে পারবে। এটি এখানকার জন্য নতুন উদ্যোগ। প্রতিদিন দুই একটা করে পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। জানাজানি হলে অনেকেই কিনবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘শুধু মুরগিতে নয়, মাছ, মাংসও পিস হিসেবে বিক্রি করা প্রয়োজন। তাহলে গরিব লোকজন সাধ্যের মধ্যে মাছ-মাংসের স্বাদ নিতে পারবেন।’

চট্টগ্রামের চকবাজারে আজ প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয় ২৩৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৯০ ও সোনালি কক বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা করে।

মুরগি পিস হিসেবে বিক্রির অন্যতম উদ্যোক্তা চকবাজার এলাকার সমাজকর্মী মো. কায়সার আলী চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘গত ২১ ফেব্রুয়ারি সেলিম পোল্ট্রি শপের মালিকের সঙ্গে আমার কথা হয়। তাকে মুরগি পিস হিসেবে বিক্রির পরামর্শ দেই। প্রথমে রাজি না হলেও পরে এ বিষয়ে একমত হন। ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি পিস হিসেবে মুরগি বিক্রি শুরু করেন।’

তিনি বলেন, ‘চকবাজার এলাকায় অনেক ব্যাচেলর বাসা ভাড়া করে থাকেন। এ ছাড়াও অনেক নিম্নবিত্তের পক্ষে দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের মুরগি কেনা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে পিস করে মুরগি বিক্রি প্রথমে সাড়া না পড়লেও পর্যায়ক্রমে এটি জনপ্রিয় হবে।’

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা বাড়তি। তবে এর আগে আড়াইশ’ টাকা পর্যন্ত হয়েছিল মুরগির দাম। এখন কেজি ১০-১৫ টাকা কমেছে।’

দাম বাড়তির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মুরগির খাদ্যের মূল উপাদানগুলো আনা হয় রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে। রাশিয়া-ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে আমদানি কমে গেছে। যার কারণে মুরগির খাদ্যের দাম বেড়েছে। অপরদিকে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি, মুরগির বাচ্চা ও ওষুধের দাম বেড়েছে। এ কারণে অনেক খামারি তাদের শেডে মুরগি তোলেনি। সংকট সৃষ্টি হওয়ার কারণে দাম বেড়েছে। তবে বেশি দিন এ দাম থাকবে না।’