বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট নিরসনে ববি শিক্ষার্থীদের ১৫ দফা দাবি

ববি
  © মোমেন্টস ফটো

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ক্যাফেটেরিয়া ও হলের খাবারের মূল্যবৃদ্ধি,পরিবহন সংকট,সেশন জট কমানোসহ ১৫ দফা লিখিত প্রস্তাবনা  বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে  জমা দিয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আজ রবিবার (০৫ মার্চ ২০২৩) বেলা ১২ টার সময় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল প্রশাসনের নিকট এ দাবিগুলো তুলে ধরে।

১৫ দফা'র দাবিগুলো হলো-
১) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটারিয়া ও হলের খাবারের দাম শিক্ষার্থীদের আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনা করে সাথে সমন্বয় করতে হবে। হলে এবং কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়াতে শিক্ষার্থীদের জন্য ২০ টাকার মধ্যে একটা খাবারের প্যাকেজ ঠিক করতে হবে (ভাত-ভর্তা- ডিম/মুরগি)। উল্লেখ্য ঢাবি টিএসসি ক্যাফেটেরিয়াতে ২০ টাকার প্যাকেজ (ভাত-ডাল ভর্তা+মুরগি) চালু আছে এবং অবশ্যই বরিশালের দ্রব্যমূল্য ঢাকার চেয়ে বেশি না।

২) বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট তীব্র হওয়ায় অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘব করতে পরিবহন সংকট নিরসনে ৪.১৫ এর পরে সকল রুটে আরও দুইটা বাসের ট্রিপ বাড়াতে হবে। পরিবহন পুলের একটা হট লাইন নির্ধারণ করতে হবে যাতে করে পরিবহন সংক্রান্ত তথ্য সহজলভ্য হয়।

৩) সেশনজট নিরসনে অতিদ্রুত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে। শিক্ষক সংকটের সমাধান করতে হবে, ক্লাসরুমের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।

৪) টিএসসি রাত ৮.০০ টা পর্যন্ত খোলা রাখতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলোর টিএসসির কক্ষ বরাদ্দের ব্যাপারে জটিলতা কমাতে হবে।

৫) বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা আয়োজনে শিক্ষার্থীদের ভূমিকা দর্শকের চেয়ে বেশি কিছু না ফলে সকল আয়োজনে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন অংশীজন তথা শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে এবং আভ্যন্তরীণ সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের মতামত গ্রহনের লক্ষ্যে পরিবেশ পরিষদের মত একটা কাঠামো নির্মান করতে হবে।

৬) ওয়াশরুম সংস্কার করতে হবে ( দরজা, কমোড, ট্যাপ, আয়না, বাল্ব ঠিক করতে হবে)। ওয়াশরুমে সাবানের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিদিন ওয়াশরুম পরিস্কার করতে হবে এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে।

৭) টিএসসসি, হল, একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, মেডিকেল সেন্টার, লাইব্রেরীতে আলাদা আলাদা কমপ্লেইন বক্স বানাতে হবে এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগগুলোর পর্যালোচনা নিশ্চিত করতে হবে।

৮) লাইব্রেরীতে গুরুত্বপূর্ন বইয়ের অপ্রতুলটা আছে, ফলে শিক্ষার্থীরা যাতে বইয়ের চাহিদা জানাতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে এবং সেই চাহিদা অনুযায়ী বই সংগ্রহ করাটা নিশ্চিত করতে হবে।

৯) মেডিকেল সেন্টারে অবশ্যই চিকিৎসকদেরকে নিয়মিত হতে হবে, প্যারাসসিটামল বাদেও অন্যান্য দরকারি ওষুধের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের এম্বুলেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে জটিলতা কমাতে হবে।
১০) মশক নিধন, পুকুর সংস্কার, বর্জ্যব্যবস্থাপন উন্নত করতে হবে। ঝোপে এবং ময়লাতে আগুন লাগানো যাবে না। বৈদ্যুতিক লাইনেরজন্য গাছ কাটা যাবে না, প্রয়োজনে ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক তারের ব্যবস্থা করতে হবে। ১১) সেশনজট নিরসনে অতিদ্রুত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে। শিক্ষক সংকটের সমাধান করতে হবে, ক্লাসরুমের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।

১২) নম্বরপত্র / ট্রান্সক্রিপ্ট তোলার ফি কমাতে হবে। জরুরী উত্তোলনের ক্ষেত্রেও বর্তমান ফির অর্ধেক চূড়ান্ত করতে হবে। ১৩) হলের সিট প্রাপ্তির ব্যাপারে শিক্ষর্থীর অর্থনৈতিক অবস্থাকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং বৈধতার মাধ্যমে সিট বন্টন নিশ্চিত করতে হবে এবং হলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

১৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হল নতুন নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করা, স্নাতকোত্তর শেষ করারা পরেও জ্ঞানজগতে ন্যুনতম ভূমিকা রাখতে না পারাটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণার সাথেই সাংঘর্ষিক। ফলে মাস্টার্সে থিসিসের ক্ষেত্রে সিজিপিএ ৩.৫০ আবশ্যক এই সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। এই সাংঘর্ষিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে এবং ন্যূনতম ৩.০০ সিজিপিএ সম্পন্ন যে সকল শিক্ষার্থী আগ্রহ প্রকাশ করবে এবং পরিশ্রম করতে সম্মত হবে তাদের সকলকেই থিসিস করতে দিতে হবে।

১৫) শিশু দিবা যত্ন কেন্দ্রকে সক্রিয় করতে হবে।

উল্লেখ্য, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।