রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই দিনে দুই খুন; প্রথমে আরসা কমান্ডার, পরে রোহিঙ্গা মাঝি

সারাদেশ
রোহিঙ্গা ক্যাম্প  © টিবিএম ফটো

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরপর দু'দিনে দু' রোহিঙ্গা নেতা খুন হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তারমধ্যে একজন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) এক সক্রিয় কমান্ডার নূর হাবি ওরফে ওয়াক্কাস রফিক (৪০) ও অপরজন হলেন কুতুপালং ক্যাম্প-২ ডব্লিউ এর মাঝি সৈয়দ হোসেন।

এই দুই খুনের ঘটনায় ক্যাম্পের পরিবেশ বেশ ঘোলাটে অবস্থা দেখা যাচ্ছে। রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের মাঝেও চাপা উত্তেজনা, ভয়, আতংক ও নিরাপত্তাহীনতা প্রকাশ পাচ্ছে।

সর্বশেষ গতকাল বুধবার (৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে কুতুপালং ক্যাম্প-২ ইস্ট এর মাঝি সৈয়দ হোসেন খুন হয়। এর আগের দিন মঙ্গলবার (৭ মার্চ) দিবাগত রাত ১টার দিকে উখিয়া ৯ নম্বর ক্যাম্পের সি ব্লকে আরসার সক্রিয় কমান্ডার নূর হাবি ওরফে ওয়াক্কাস রফিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্যাম্পের এক রোহিঙ্গা বলেন, ডা. ওয়াক্কাস ক্যাম্পে আরসা কমান্ডার হিসেবে পরিচিত ছিল। তাই ক্যাম্পের লোকজন তাকে ভয় পেত। সম্প্রতি আরসার সঙ্গে তার দূরত্ব বাড়ে। এতে সে তাদের গ্রুপ থেকে বেরিয়ে আসে। এ কারণে আরসা সদস্যরা তাকে হত্যা করতে পারে।

অন্যদিকে সাধারণ রোহিঙ্গাদের দাবী, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসার সদস্যরা মাঝি সৈয়দ হোসেনকে হত্যা করেছে। গত বছর দেড়েক ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে রোহিঙ্গাদের দুই সন্ত্রাসী গ্রুপ আরসা ও আরএসও। তাদের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টায় অনেক রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছে৷ এরমধ্যে অনেক নিরীহ রোহিঙ্গাও রয়েছে।

শীর্ষ সন্ত্রাসী ড. ওয়াক্কাস হত্যার ব্যাপারে ৮-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) আমির জাফর জানান, দুষ্কৃতিকারীরা শীর্ষ সন্ত্রাসী ড. ওয়াক্কাসকে গুলি করে হত্যা করেছে। হত্যাকারীদের ধরতে অভিযান চলছে। 

এপিবিএন-১৪ এর কমান্ডিং অফিসার সৈয়দ হরুন অর রশিদ বলেন, ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপ। আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে দাবী তার। তাদের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টায় অনেক রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছে৷ এরমধ্যে অনেক নিরীহ রোহিঙ্গাও রয়েছে।

উখিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতার অভিযান  অব্যাহত আছে। থানা এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থতি স্বাভাবিক। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।