হবিগঞ্জ জেলা জুড়ে ব্রি-২৮ ধানে ছিটা হওয়ার সম্ভাবনা

ধান
  © টিবিএম ফটো

বোরো ফসল ব্রি-২৮ জাতের ধানের চারা রোপণ করে গত কয়েক বছর ধরে চিটা (ধানের খোসার ভেতর চাউল না হওয়া) হওয়ার খবরে এবছর এ জাতীয় ফসল চাষাবাদ না করতে কৃষকদের অগ্রীম সতর্ক করেছিল কৃষি বিভাগ। ব্রি ধান-২৮ এর পরিবর্তে ব্রি ধান-৯৬ এবং ব্রি ধান-২৯ এর পরিবর্তে ব্রি ধান-৯২ ও ৮৯ চাষাবাদ করার পরামর্শ প্রদান করা হয়েছিলো।

কিন্তু অনেক অতি উৎসাহী কৃষক কৃষি বিভাগের পরামর্শ না শুনে হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাওরে ব্রি ধান-২৮ চাষাবাদ করেছেন।গত কয়েকদিন ধরে জেলার বিভিন্ন হাওরে ধানকাটা শুরু হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এতে হবিগঞ্জ জেলাজুড়ে ব্রি-২৮ ধানে চিটা (স্থানীয় ভাষায় চুছা) হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।হবিগঞ্জ সদর, লাখাই, বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ, নবীগঞ্জ ও মাধবপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা জানিয়েছেন ব্রি-২৯সহ বিভিন্ন জাতের পাশাপাশি তারা কিছু কিছু ব্রি-২৮ জাতের ধানের চারাও রোপন করেছিলেন।

অন্যান্য জাতের ধান ভালো হলেও ২৮ জাতের সব ধান চুছা (চিটা) হয়ে গেছে। কেউ কেউ পরিবারের খোরাকি (খাওয়া) জন্য এক/দুই কের ২৯ বা অন্য জাতের ধান চাষাবাদ করে বিক্রির উদ্দেশ্যে বেশি জমিতে ২৮ জাত চাষাবাদ করেছিলেন। ফলে তারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বেশি এবং পড়েছেন বিপাকে।বানিয়াচং উপজেলার কৃষক মোশাহিদ মিয়া জানান, ২৮ ধানে গত বছরই বেশি চুছা হয়েছিল। এর আগের বছর তেমন হয়নি, সামান্য ধানে চুছা হলেও বাকী ধান ভালোই হয়েছিল।

অন্য জাতের ধানের চেয়ে ২৮ জাতের ধানের বেশি ফলন হয়, তাই বিক্রির জন্য এ ধান অনেকে বেশি চাষ করেন। এবছর ২৮ ধানে যে এত চুছা হবে এটা অনেকে ভাবতে পেরে ২৮ জাত চাষাবাদ করেছিলেন। এখন দেখা যাচ্ছে সব ২৮ ধানে চুছা হয়ে গেছে।২৮ ধান চাষাবাদ না করতে কৃষি অফিসের লোকজন নিরুৎসাহিত করেছিলেন কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, যারা তাদের কাছে পরামর্শ নেয়ার জন্য গিয়েছিলেন তাদেরকে নিরুৎসাহিত করেছিলেন।

এদিকে মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন এমন কয়েকজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জানান, ব্রি ধান-২৮ এ বাস্ট রোগ হওয়ায় এমন হয়েছে। বোরো ফসলের মধ্যে এটি পুরাতন জাত। এ জাতের ধানে পোকামাকড় আক্রমণ ঘটলে ঔষধ এবং কীটনাশক প্রয়োগ করলে খুব ভালো কাজ করেনা।একারণে কৃষকদেরকে ব্রি ধান-২৮ চাষাবাদে নিরুৎসাহিত করা হয়। এর পরিবর্তে ব্রি ধান-৮৮, ব্রি ধান-৯২, ব্রি ধান-৯৬ এবং ব্রি ধান-৮৯ চাষাবাদ করতে উৎসাহিত করা হয়।

এজন্য আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের মধ্যে লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। যারা আমাদের প্রচার-প্রচারণা শুনেও ব্রি ধান-২৮ চাষাবাদ করেছেন তারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।এবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আগামী বছর থেকে হয়তো সবাই আমাদের প্রচার-প্রচারণা আমলে নিয়ে ব্রি ধান-২৮ চাষাবাদ থেকে বিরত থাকবেন।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ