ঈশ্বরদীতে পথে পথে ইফতার ও সেহরি বিতরণ নান্দনিক ঠিকানার

ইফতার মাহফিল
  © টিবিএম ফটো

একদল শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় তৈরি হচ্ছে ইফতার ও রান্না হয় সেহরি। সংগঠনের নামে আবার ঝোলানো হয়েছে একটি রঙ্গিন ব্যানার। যাতে লেখা রয়েছে-"আমি সূর্যের আলোই নিজেকে প্রস্তুত রাখি মানবতার কল্যানে নিয়োজিত থাকি"।

পাবনার ঈশ্বরদীতে এমন একটি সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন 'নান্দনিক ঠিকানা"।২৫-৩০ জন শিক্ষার্থীর উদ্যগে নান্দনিক ঠিকানা নামের এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন টি পথে পথে ঘুরে প্রতিদিন শতাধিক রোজাদারদের মাঝে বিনামুল্যে পৌছে দিচ্ছে সেহরি ও ইফতার সামগ্রী।  যারা খেয়ে না খেয়ে কোনরকম রাখছেন পবিত্র মাহে রমজানের রোজা, সারাদিন রোজা রাখার পর চাইলেও ইফতার কিনে খাওয়ার সামর্থ নেই সমাজের এমন উপেক্ষিত দরিদ্র জনগোষ্ঠী, অসহায়,এতিম ও গরিব মানুষের মাঝে ইফতার ও সেহরি সামগ্রী বিতরন করছে এই  সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা। ইফতার প্যাকেট পেয়ে খুশিতে  মুখে ছল ছল হাসি সামর্থহীন এ রোজাদারদের।

নান্দনিক ঠিকানার প্রত্যেকটি স্বেচ্ছাসেবকই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের এমন সেবামুলক কাজ যেন রীতিমত সাড়া ফেলেছে শহরজুড়ে।

রমজানের চতুর্থ দিন থেকে সংগঠনটি সেহরি ও ইফতার বিতরন কর্মসুচি চালিয়ে আসছে এবং তাদের এই কর্মসুচি  রমজানের পুরো মাসব্যাপী চলবে বলে জানা যায়।

উপজেলা বাস টার্মিনাল মালিক সমিতির অফিস কক্ষে অবস্থিত সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা শহরের বিভিন্ন এলাকা, ফুটপাত, রেলস্টেশন, বাস স্ট্যান্ড সহ বিভিন্ন জায়গায় অসচ্ছল ও নিম্নবিত্ত রোজাদারদের হাতে  পৌছে দিচ্ছেন তাদের তৈরি ইফতার প্যাকেট।

নিম্নআয়ের সামর্থহীন বিশেষ করে রিকশাচালক, দিনমজুর, অভাবগ্রস্থ ও পথচারী যারা রোজা রাখে কিন্তু ইফতার ও সেহরির খাবার ক্রয় সামর্থের বাইরে তারাও পাচ্ছেন নান্দনিক ঠিকানার ইফতার ও সেহরি।

ঈশ্বরদী রেলগেটে দাঁড়িয়ে থাকা রিকশাচালক আব্দুল খালেক  বলেন, সারাদিন রোজা থেকে রোদে পুড়ে রিকশা চালায়। বাড়িতে দুই ছেলে-মেয়ে রোজা রাখে। ইচ্ছে থাকলেও দোকানে সাজিয়ে রাখা বাহারী পদের ইফতার কিনতে পারিনা। দ্রব্যমুল্যের উর্ধ্বগতি ও প্রচন্ড রোদ-গরমে ভাড়া কম হওয়াই ইফতার ক্রয় সামর্থের বাহিরে। কয়েকজন ছেলে এসে ইফতার করার জন্য দুটি প্যাকেট হাতে দিল। এটা বাড়িতে নিয়ে ছেলে-মেয়ের সাথে একসাথে ইফতার করবো।

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ইমন মুবিন হোসেন বলেন, ভালো কিছুর জন্য ছোট কিছুই যথেষ্ঠ। পবিত্র রমজান মাসে সমাজের কিছু মানুষের পাশে দাড়ানোর জন্যই নিয়েছি এই ছোট উদ্যেগ। সমাজে অনেকেই আছে যারা অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত, তাদের মুখে একরাশ হাসি ফুটানোর স্বল্প প্রচেষ্টায় যাত্রা শুরু করেছে 'নান্দনিক ঠিকানা'। প্রতিদিন এক থেকে দেড়শো এবং রমজানের পুরো মাসব্যাপী প্রায় ৫০ হাজার লোকের মাঝে ইফতার ও সেহরি বিতরন করার প্রস্তুতি নিয়েছি। শুধু ইফতারি আর সেহরির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবেনা সংগঠনের কার্যক্রম। ঈদে পথশিশুদের দেওয়া হবে নতুন জামা। পথশিশুরাও যেন ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারে সকলের সাথে তার জন্য নান্দনিক ঠিকানা তাদের পাশে দাড়াবে। দ্রব্যমুল্যের উর্ধ্বমুখীর কথা মাথায় রেখে ঈদের পরই শুরু করবো পাঁচ টাকার হাট নামে নতুন কার্যক্রম যেখানে পাঁচ টাকার মধ্যেই নিম্ন আয়ের মানুষের চাহিদা মেটাতে থাকবে সীমিত ব্যবস্থা