মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বান্ধবী নিহত, মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে চালক বন্ধুর আত্মহত্যা

সড়ক দুর্ঘটনা
  © ফাইল ছবি

ঈদের আগের দিন (২১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় বন্ধুর মোটরসাইকেলে চড়ে যাওয়ার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় রাফিয়া রফিক নওশীন (২১) নামের এক ছাত্রী নিহত হন। এ ঘটনায় বাইকচালক রাহাত হোসেন আহত হন। নওশীনের মৃত্যুর দুইদন পর গতকাল (২৩ ফেব্রুয়ারি) আহত রাহাত খিলগাঁও দক্ষিণ গোড়ানে নিজ বাসায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে।

সোমবার (২৪)  বিকেলের দিকে মতিঝিল ও খিলগাঁও থানার পুলিশ পৃথক দুটি মৃত্যুর ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

পরে আইনি প্রক্রিয়ার পর তাদের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

পুলিশ জানায় নওশীন সিদ্ধেশ্বরী এলাকার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এইচএসসি পাস করে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির চেষ্টা করছিলেন। এছাড়া রাহাত হোসেন শান্তিনগরের অবস্থিত হাবিবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর ছাত্র ছিল। তারা খুব ভালো বন্ধু ছিল এবং তাদের মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক ছিল।

মতিঝিল থানার উপ- পরিদর্শক (এসআই) মীর মো. মজাহারুল ইসলাম বলেন, গত ২১ এপ্রিল রাত আনুমানিক ৯টার কিছু পর নওশীন ও রাহাত বাইকযোগে খিলগাঁও থেকে ওয়ারিতে যাচ্ছিল ঈদ উপলক্ষে কিছু কেনাকাটার জন্য। বাইক চালাচ্ছিলেন রাহাত, পেছনে বসা ছিল নওশীন। তারা কাপ্তান বাজারের বিপরীতে বঙ্গভবনের দক্ষিণ পাশের রাস্তায় পৌঁছালে একটি ট্রাক তাদের বাইককে ধাক্কা দেয়। এতে তারা ছিটকে  পড়ে যান। এতে দুজনই আহত হলে তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। এ সময় সেখানে কর্তব্যরতর চিকিৎসক পরীক্ষার পরে নওশীনকে মৃত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনায় রাহাতের হাত ভেঙে যায় ও বাইকের সেইলেন্সার পাইপে তার পা পুড়ে যায়। রাহাত হাসপাতালে কয়েক ঘণ্টা চিকিৎসা নেয়।

তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় বান্ধবী নওশীনের মৃত্যুর একদিন পর রাহাত তার খিলগাঁওয়ের বাসায় আত্মহত্যা করেন।

এদিকে খিলগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজিত কুমার সাহা বলেন, রোববার (২৩ এপ্রিল) সকালে খবর পেয়ে খিলগাঁও দক্ষিণ গোড়ানের একটি বাসা থেকে রাহাত হোসেন (২১) নামে এক ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের বিবিএর ছাত্র ছিল।

তিনি আরও জানান, পরিবার জানিয়েছে গত ২১ এপ্রিল রাহাতের বাইকে থাকা অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় বান্ধবী নওশীন মারা যায়। সেই দুর্ঘটনায় সে নিজেও আহত হয়েছিল, তার হাত ভেঙে যায়। সেখানে ব্যান্ডেজ করা ছিল এবং তার পা বাইকের সাইলেন্সার পাইপে পুড়ে গিয়েছিল।

পরিবার থেকে আরও জানানো হয়েছে, বন্ধু নওশীনের সঙ্গে রাহাতের ভালো সম্পর্ক ছিল। উভয় পরিবার তাদের বিষয়গুলি জানতো। নিজের বাইকে থাকা অবস্থায় নওশীনের মৃত্যুর বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি রাহাত। এ কারণেই সে আত্মহত্যা করেছে।

ঢামেক হাসপাতালের মর্গ সহকারি সেকান্দার জানান, পৃথক দুটি থানা থেকে ২ জনের মরদেহের সুরাতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে পুলিশ। পরে  ঢামেক হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ২২ এপ্রিল নওশীনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। এছাড়া রোববার (২৩ এপ্রিল) রাহাতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন শেষে তার মরদেহও পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।-নিউজ ২৪


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ