গলাচিপার ইউএনও হস্তক্ষেপে ১৯ বছরের বিরোধ নিষ্পত্তি  

গলাচিপা
  © টিবিএম ফটো

পটুয়াখালীর গলাচিপায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট  মো: মহিউদ্দিন আল হেলাল এর হস্তক্ষেপে দীর্ঘ ১৯ বছরের জমি সংক্রান্ত আপন দুই ভাইয়ের চলমান বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয়েছে। 

শনিবার (৬ই মে) দুপুরে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড মধ্য পাড়ডাকুয়া গ্রামের বিরোধীয় সম্পত্তি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে এ বিরোধ নিষ্পত্তি করেন তিনি। এ-সময় আপন দুইভাই শাহীন বিশ্বাস ও শামীম বিশ্বাস এর মধ্যে জমি নিয়ে চলমান বিরোধ নিষ্পত্তি করে তাদের মিলমিশ করে দেয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে গলাচিপা উপজেলায় ডাকুয়া  ইউনিয়নের প্রয়াত স্বনামধন্য সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন বিশ্বাসের দাদা আব্দুল হামেদ বিশ্বাস ওয়াকফ এস্টেট (ইসি নং- ৭১২৪)। ওয়ারিশ সূত্রে এই সম্পত্তির বর্তমান অংশীদারদের মধ্যে নাসির উদ্দিন বিশ্বাসের দুই ছেলে বিএম শাহীন বিশ্বাস ও শামীম বিশ্বাসের মধ্যে সম্পত্তির ভোগদখল নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে একাধিকবার স্থানীয়ভাবে জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকে হয়। বিরোধ নিষ্পত্তিতে উপজেলার বিভিন্ন  সালিশগণকে সঙ্গে নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হয়। তবে কোনভাবেই বিরোধ নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি। ফলে এ বিরোধ নিয়ে পক্ষদ্বয় ইউএনও মহিউদ্দিন আল হেলালের দ্বারস্থ হয়। অবশেষে তার হস্তক্ষেপে কাগজপত্র পর্যালোচনা করে ও পক্ষদ্বয়ের মধ্যে সমঝোতা করে বিরোধ নিষ্পত্তি করে ওয়াকফ এস্টেটের আইনগত মোতাওয়ালি্ল শাহীন বিশ্বাসকে সম্পত্তি বুঝিয়ে দেন। শামীম বিশ্বাস এর বিভিন্ন দাবি দাওয়ার বিষয়ে সমাধান দিতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে দ্বায়িত্ব দেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, ডাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ রায়, স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার, উপজেলা ভূমি অফিসের তহশিলদার, পার্শ্ববর্তী ওয়ার্ড মেম্বার, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, বাড়ির মুরুব্বিরা সহ গ্রামের বিভিন্ন লোকজন। 

এ বিষয়ে শাহিন বিশ্বাস বলেন, দীর্ঘদিন তিনি ঢাকায় অবস্থানের কারণে তার আপন ছোট ভাই শামীম বিশ্বাস জমিজমা ও পরিবারের দেখাশোনা করতেন। কিন্তু কোভিড-১৯ চলাকালীন সময়ে চাকরি হারিয়ে বি এম শাহিন বিশ্বাস গ্রামে ফিরে আসেন এবং ছোট ভাই শামীমকে এস্টেটের তার অংশ বুঝিয়ে দিতে বলেন। কিন্তু শামীম বিভিন্ন ছলচাতুরীর আশ্রয় নেয় এবং এস্টেট বুঝিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে শুরু হয় বিরোধ।  তবে এ বিরোধ চলছিল অনেক আগে থেকেই। 

শামীম বিশ্বাস বলেন, আমি সম্পত্তির দেখভাল  করেছি। পরিবারের দেখাশোনা, মায়ের চিকিৎসা খরচ ও ভাইবোনের বিয়ের খরচ দিয়েছি। এ কারণে আমি লক্ষ লক্ষ টাকা ঋণগ্রস্ত হয়েছি। 

ডাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ রায় বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পরে সমস্যা সমাধানে অনেকবার চেষ্টা করেছি। আজকে ইউএনও মহোদয় সরজমিনে এসে ফয়সালা দিয়েছেন এজন্য আমরা স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞ। 

গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও) মো: মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, গত তিন মাস আগে শাহিনের বিষয়টি আমার নজরে আসে।  আমি স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করি। বিষয়টি নানা জটিলতায় তখন নিষ্পত্তি করা যায়নি। এর থেকে আইন শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা ছিল । তাই আমি নিজে গিয়ে তদন্ত করে কাগজপত্র পর্যালোচনা করে একটা সমাধান দিয়েছি। আশাকরি অচলাবস্থার অবসান ঘটবে।


মন্তব্য