ঈশ্বরদীতে গ্রাহকের কোটি টাকা হাতিয়ে উধাও ভুয়া সমিতির সভাপতি

ঈশ্বরদী
সমিতির সভাপতি সহাদেব কর্মকার (৪২)  © টিবিএম ফটো

পাবনার ঈশ্বরদীতে বন্ধন বাণিজ্যিক সমিতির প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে পালিয়ে গেছেন সমিতির সভাপতি সহাদেব কর্মকার (৪২)। তিনি ব্যবসায়ীদের অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে উপজেলার জয়নগর শিমুলতলা মোড়ের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে  দুই ও এক বছর মেয়াদী এ সমিতি গঠন করেন। সহাদেব কর্মকার উপজেলার মানিকনগর গ্রামের গুরুপদ কর্মকারের ছেলে ও শিমুলতলা মোড়ে গ্রামীণ জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী।   

স্থানীয়রা জানান, সহাদেব কর্মকারের  শিমুলতলা মোড়ে গ্রামীণ জুয়েলারী নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠা রয়েছে। এ ব্যবসার পাশাপাশি তিনি বন্ধন বাণিজ্যিক নামে  একটি সঞ্চয় সমিতি খুলেন। ব্যবসায়ী  ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় দুই শতাধিক সদস্য সমিতিতে অন্তর্ভুক্ত করেন। এ সমিতিতে দুই বছরে প্রায় এক কোটি টাকার বেশি সঞ্চয় হয়েছে। 

সমিতির সদস্য চয়ন খান জানান, সহাদেব কর্মকার ৫ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে। ১৪ মে থেকে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। পরিবারের লোকজন বলছে সে কোথায় গেছে তা কেউ জানে না। সমিতির সদস্যদের অনেকের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় লভ্যাংশসহ সঞ্চয়ের টাকার জন্য সহাদেবকে বলেছেন। তিনি ফেরত দেওয়ার নামে প্রায় এক মাস ধরে সময়ক্ষেপন করছিলেন। ১৪ মে কিছু সদস্যের সঞ্চয়ের টাকা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এখন আর তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।  

সমিতির আরেক সদস্য মিন্টু সরকার জানান, তিনি  ৮২ হাজার টাকা সঞ্চয় রেখেছেন। তার মেয়াদ পূর্ণ হলেও সঞ্চয় ও লভ্যাংশ টাকা একাধিকবার  ফেরত চেয়েও তিনি পাননি।

অপর সদস্য গ্রাম্য চিকিৎসক  কমল সরকার জানান, তার প্রায় দেড় লাখ টাকা জমা রয়েছে। সব গ্রাহকের টাকা মিলে কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। 

অভিযুক্ত সহাদেব কর্মকারের মুঠোফোনে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ফোন বন্ধ রয়েছে। সহাদেব কর্মকারের স্ত্রী মিতা রানী সরকার বলেন, সহাদেব বাড়িতে নেই। কোথায় গেছে বলে যায়নি।   

সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) আসাদুল হক আশা বলেন, সমিতির টাকা আত্মসাত করে সহাদেবের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমি লোকমুখে শুনেছি। টাকার পরিমাণ কত হবে তা সঠিক জানি না।

সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বাবলু মালিথা বলেন, বন্ধন বানিজ্যিক সমিতির নাম শুনেছি এর আগে তবে টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। সদস্যদের টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ নিয়ে আসেনি। তবুও আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখবো।

উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মাসুদ রানা বলেন, বন্ধন বাণিজ্যিক সমিতি নামে কোন সঞ্চয় সমিতির নিবন্ধন নেই। নিবন্ধন ছাড়াই অবৈধভাবে এ সমিতি গঠন করা হয়েছে।  

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


মন্তব্য