দুমকিতে স্কুলশিক্ষকার বিরুদ্ধে পাতানো প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা গ্রহণের অভিযোগ

পটুয়াখালী
  © সংগৃহীত

পটুয়াখালীর দুমকিতে সৃজনী বিদ্যানিকেতন(উচ্চ মাধ্যমিক) বিদ্যালয়ে অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষায় নবম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের নৈবাচনিক পরীক্ষার প্রশ্নে ডট/ফুলস্টপ চিহ্ন দিয়ে সঠিক উত্তরটি চিহ্নিত করে পাতানো প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে ওই স্কুলের ইশরাত জাহান রুমা নামের একজন সহকারী শিক্ষকার বিরুদ্ধে। 

এছাড়াও তাঁর তৈরি করা ২য় শ্রেণির ইংরেজি প্রশ্নে একাধিক ভুল রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিষয়গুলো জানাজানি হলে শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। 

ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের হাতে পাওয়া প্রশ্নপত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, শুধু ৭ নং প্রশ্নে ডট চিহ্ন দেয়া নেই। এছাড়া সব প্রশ্নের সঠিক উত্তরের পাশে ডট/ফুলস্টপ চিহ্ন দিয়ে রাখা হয়েছে বিধায় বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

জানা যায়, মঙ্গলবার(১৩ জুন) সৃজনী বিদ্যানিকেতনে নবম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ের অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষার বহুনির্বাচনি প্রশ্নে ওই স্কুলের শ্রেণি শিক্ষকা ইসরাত জাহান রুমা দু-একটি বাদে আর সকল প্রশ্নের উত্তরের পাশে কম্পিউটারের মাধ্যমে ডট/ফুলস্টপ চিহ্ন দিয়ে রাখেন। যাতে তাঁর পছন্দের শিক্ষার্থীরা ওই ডট দেখে দেখে উত্তর করে সর্বোচ্চ নম্বর পেতে পারে।   

আত্মীয়করণ ও পক্ষপাতিত্বমূলক আচরনের অভিযোগ তুলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই শ্রেণির অধিকাংশ শিক্ষার্থী ও অভিভাবক বলেন, তাঁর আপন দুই ভাতিঝি তারিকুল ইসলাম তারেক খানের মেয়ে তানহা আনজুম খান পৌষি ও স্বপন খানের মেয়ে আদিবা নবম শ্রেণিতে পড়ে। তাই রুমা ম্যাডাম উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে প্রশ্নের ডট দিয়ে রেখেছেন। এছাড়াও বলেন, পৌষি ও আদিবা ভুল করলে তা তিনি দেখেও দেখেন না কিন্তু অপর শিক্ষার্থীরা পান থেকে চুন খসলেই তাদের ওপর চড়াও হন। 

অভিযুক্ত শিক্ষিকার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রথমে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, সব সঠিক গুলো ডট দেয়া নেই। আবার বলেন, দুই একটা ভুল ডট দেয়া আছে। 

প্রশ্নের উত্তর কাগজে উঠিয়ে নিজের কাছে রাখার জন্য ডট দিয়ে থাকলে কেন সব সঠিক থাকবে না বা ডট দেয়া থাকবে না এমন প্রশ্ন করলে কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি তিনি। তিনি বলেন, সবাইকে কমন নম্বর দিয়ে দেব। 

পরে ওই শিক্ষিকা কল করে সাংবাদিককে বলেন, নবম ও দশম শ্রেণিতে এ রকম প্রশ্ন করেছি। দশম শ্রেণির প্রশ্ন থেকে ডট উঠাইলেও নবম শ্রেণিরটা থেকে উঠাতে মনে নেই। এরপর সাংবাদিকের বাড়ির নাম ঠিকানা জিজ্ঞেস করেন এবং তাঁর নিকট আত্মীয় স্বজন দিয়ে ফোন করিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন তিনি। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল কুদ্দুস  বলেন, অভিযোগ একটি সকালবেলা পেয়েছি। তবে তা ভালোভাবে অভিযোগকারীরা বোঝাতে পারে নি। অধ্যক্ষকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। 

উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা বদরুন নাহার ইয়াসমিন বাংলাদেশ মোমেন্টসকে বলেন, অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

এবিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পদে দ্বায়িত্বে থাক প্রফেসর লিটন চন্দ্র সেনকে তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ না করে কেটে দেন। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল ইমরান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে এবং অভিযোগের সত্যতার ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।