দুমকীতে গরুর লাম্পি স্নি রোগ, বিপাকে খামারিরা
- মোঃ রিয়াজুল ইসলাম, পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
- প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৩, ০৫:০৩ PM , আপডেট: ২১ জুন ২০২৩, ০৫:০৩ PM

পটুয়াখালীর দুমকীতে গরুর লাম্পি স্নি ডিজিজ(এলএসডি) রোগ ছড়িয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন খামারিরা। সরকারি পর্যায়ে এর কোন প্রতিষেধক(ভ্যাকসিন) সরবরাহ না থাকায় গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তারা।
জানা যায়, এ রোগে মৃত্যুহার কম হলেও ঝুঁকি বাড়ছে দুগ্ধ, চামড়া ও মাংস শিল্পে। এ রোগে আক্রান্ত হলে পশুর চামড়া অনকটাই অকার্যকর হয়ে যায়। আবার দুগ্ধবতী গাভী আক্রান্ত হলে দুধ উৎপাদন শূন্যের কোটায় নেমে আসে। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন খামারিরা। অপরদিকে গরুর ‘লাম্পি স্নি’ রোগ ছড়িয়ে পড়লেও এতে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা।
চরবয়েড়া গ্রামের ক্ষুদ্র খামারি সহিদুল ইসলাম ইসলাম বলেন, ’আমার খামারে ছোট বড় মিলিয়ে সাত আটটি গরু আছে। চারিদিকে যেভাবে রোগ ছড়াচ্ছে এতে বিপাকে আছি।’
উত্তর মুরাদিয়া গ্রামের সৈয়দ আবুল কালাম বলন, ’আমার একটি গরু আক্রান্ত হলে আমি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েছি। অনেক টাকা খরচ করেও ভালো চিকিৎসা পাই নাই। ওই গরুটি মারা গেছে। ডাক্তারদের জিজ্ঞেস করলে তারা এই রোগের সুনির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নাই বলেছেন।'
মশা ও মাছির মাধ্যমে ছড়ানো ভাইরাসজনিত এ রোগটি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রাণি বিশেষজ্ঞ মোঃ আমিরুল ইসলাম সোহাগ বলেছেন,’খুব সাধারণ চিকিৎসায় গবাদি পশুর এই রোগ সারানো সম্ভব।
সচেতনতা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছনতা এই রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে। লাম্পি স্নি রোগরে লক্ষণ প্রকাশ পেলে দ্রুত রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে বলেছেন।’ এই লাম্পি স্নি রোগেরে প্রাদুর্ভাব থেকে খামারকে মুক্ত রাখা না গেলে গরুর মৃত্যুসহ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে খামারিরা। গাভী আক্রান্ত হলে দুধ উৎপাদন কমে যায়। লাম্পি স্নি ডিজিজ গরুর জন্য একটি ভয়ঙ্কর ভাইরাসজনিত চর্মরোগ, যা খামারের মারাত্মক ক্ষতির কারণ।
এ বিষয় উপজলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান বলেন, গরুর লাম্পি স্নি রোগের সুনির্দিষ্ট ভ্যাকসিন সরকারিভাবে সরবরাহ নাই। শুধু সচতনতার মাধ্যমই এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। রোগর লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে হয়। প্রাথমিকভাবে অ্যাটিপাইরটিক ও অ্যাটিহিস্টামিন দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। নডিউল বা গুটি ফেট গল বা সেকন্ডারি ব্যাক্টরিয়াল ইনফেকশন দমন করার জন্য ক্ষতস্থান পেভিসপ অথবা ভায়োডিন দিয়ে ড্রেসিং করে বোরিক পাউডার বা সালফোনিলামাইড পাউডার লাগানো যেতে পারে। অযথা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের প্রয়োজন নেই।
তিনি আরও বলেন, এ রোগে অসুস্থ পশু আলাদা করতে হবে। খামারের ভিতরের এবং আশেপাশের পরিবেশ পরিস্কার-পরিচ্ছন রেখে মশা-মাছির উপদ্রব কমিয়ে রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
পটুয়াখালী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.সঞ্জীব কুমার বিশ্বাস বাংলাদেশ মোমেন্টসকে বলেন, এলএসডি রোগের সুনির্দিষ্ট ভ্যাকসিন এখন পর্যন্ত আবিস্কার হয়নি। তবে ভ্যাকসিন তৈরি করতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে।