দস্যুবৃত্তি ছেড়ে দেওয়া ২৮৪ জনকে ঈদ উপহার দিলো র‌্যাব-৮

সুন্দরবনে জলদস্যুবৃত্তি ছেড়ে আত্মসমর্পণ করা ২৭টি বাহিনীর ২৮৪ জনকে ঈদ উপহার দিয়েছেন র‌্যাব-৮-এর সদস্যরা। এ সময় তাদের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।

রোববার (২৫ জুন) দুপুরে মোংলার পিকনিক কর্নার চত্বরে র‌্যাব মহাপরিচালকের ঈদ উপহার বিতরণ করেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর জাহাঙ্গীর আলম। উপহারসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে চাল, তেল, ঘি, সেমাই, চিনি, দুধ, লবণ, বাদাম, কিশমিশ, জিরা, মসলা ও পেঁয়াজসহ অন্যান্য মালামাল এবং নগদ অর্থ।

মেজর জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘দস্যুবৃত্তি ছেড়ে দেয়া ২৮৪ জনের মধ্যে বাগেরহাটের সাইনবোর্ডের ৩০ জন, ভাগার ৯০ জন, মোংলার ৫৭ জন, খুলনার জিরো পয়েন্টের ১৯ জন, আঠারো মাইল এলাকার ১ জন, তালা বাজারের ৩ জন, শিববাড়ির ৪ জন, কয়রার ১৮ জন, সাতীরার মুন্সীগঞ্জের ৫৪ জন, সদরকোর্টের ৭ জনকে ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘সুন্দরবনে এখন শান্তির সুবাতাস বইছে। অপহরণ-হত্যা এখন তিরোহিত। জেলেদের কষ্টার্জিত উপার্জনের ভাগও কাউকে দিতে হচ্ছে না। মাওয়ালি, বাওয়ালি, বনজীবী ও বন্যপ্রাণী এখন সবাই নিরাপদ, বিশেষ করে মৎস্যজীবীরা। সুন্দরবনে নির্ভয়-নির্বিঘ্নে আসছেন দর্শনার্থী-পর্যটক এবং জাহাজ বণিকরা। এভাবেই সরকারের দূরদর্শিতায় সুন্দরবনকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক গতিশীলতার ব্যাপক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। মূলত প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব, দিকনির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতা এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধান এবং র‌্যাবের সক্রিয় অংশগ্রহণে সুন্দরবন আজ জলদস্যুমুক্ত।’

‘বর্তমানে আত্মসমর্পণকারী জলদস্যুরা পুনর্বাসিত হয়েছে এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন। সরকারের পক্ষ থেকে আত্মসমর্পণকারী সব জলদস্যু ও বনদস্যুর বিরুদ্ধে রুজু করা হত্যা ও ধর্ষণ মামলা ছাড়া অন্য সব সাধারণ মামলা সহানুভূতিসহকারে বিবেচনার বিষয়টি চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে তাদের জলদস্যু সংক্রান্ত ৫৩টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে এবং ১৩০টি মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ২৮৪ জলদস্যুর মাঝে ৮৬ জনকে বসতবাড়ি, ৭৬ জনকে মুদি দোকান, ১০৬ জনকে গরু এবং ১৬ জনকে নৌকা দেয়া হয়েছে।’

ভবিষ্যতেও র‌্যাব-৮-এর এ ধরনের জনকল্যাণমূলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা। 

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।