দুমকীতে ৪ সন্তানের জননীকে তালাক নোটিশ, স্ত্রীর বিরুদ্ধেও রয়েছে স্বামীর অভিযোগ 

দুমকী
অভিযুক্ত স্বামী আনোয়ার হোসেন  © ফাইল ছবি

পটুয়াখালীর দুমকীতে ৪ সন্তানের জননীকে যৌতুকের দাবিতে তালাকের নোটিশ করা হয়েছে এমন অভিযোগ উঠেছে মোঃ আনোয়ার হোসেনের (৪৫) বিরুদ্ধে। অপর দিকে অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেনও স্ত্রী লিমা'র (৩৮) বিরুদ্ধে করেছেন নানান অভিযোগ। 

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের মধ্য ঝাটরা গ্রামের ৬নং ওয়ার্ডের আঃ মোতালেব হাওলাদারের ছেলে আনোয়ার হোসেন এবং পটুয়াখালীর সদর উপজেলার অন্তর্গত বদরপুর ইউনিয়নের খলিসাখালি গ্রামের শাহ আলম মৃধা'র মেয়ে লিমা আক্তারের সাথে ১৯ বছর পূর্বে বিয়ে হয়।

আনোয়ার পেশায় একজন রং মিস্ত্রি। লিমা- আনোয়ার দম্পতির সংসারে তিন মেয়ে-জেরিন আক্তার (১৬), জেনিসা আক্তার (১৩), আরিফা আক্তার (৮) এবং  লাবিব (১) নামে একটি ছেলে রয়েছে। আনোয়ার হোসেন তার গ্রামের বাড়িতে বিল্ডিং ঘর নির্মাণ কালে স্ত্রী'র কাছে ২ লক্ষ টাকা টাকা দাবি করেন। শারীরিক নির্যাতনের এক পর্যায়ে স্ত্রী লিমা বাবার বাড়ি থেকে দাবীকৃত টাকা এনে দেয় স্বামীকে।

সম্প্রতি লিমার কাছে অভিযুক্ত আনেয়ার ২য় দফায় আবারও ১ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করেন। বাবা মারা যাওয়ায় ও ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে লিমা টাকা আনতে অপারগ প্রকাশ করায় আনোয়ার তার স্ত্রী লিমার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। স্থানীয় সালিশগণের মধ্যস্থতায়ও কোনো সমাধান হয়নি তাদের। অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন বিগত কয়েক মাস ধরে পরিবারের কোনো খোঁজ-খবর না নিয়ে উল্টো এ বছরের ৩ জুলাই লিমার বিরুদ্ধে তালাক নোটিশ পাঠায়। 

স্বামীর চরিত্রের প্রতি তীব্র অভিযোগ তুলে স্ত্রী লিমা আক্তার বলেন, আমার স্বামী আমাকে বলেছেন- তার ভাইয়ের স্ত্রীর বড় বোনকে (বিয়াইনকে) বিয়ে করলে ৫ লাখ টাকা দিবে। সেখান থেকে ১ লাখ টাকা দিয়ে আমাকে বিদায় (তালাক) দিবে। আর বাকি টাকা তার লাভ থাকবে। 

আমাদের মা-বাবা উভয়কেই দরকার এমন কথা বলে ওই দম্পতির বড় মেয়ে জেনিসা আক্তার হাউমাউ করে কেঁদে বলেন, কিছুদিন পরে আমার এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট দিবে। এমন সময় এই খবর। আমার বাবা তো আমাদের জীবন অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিল। 

বিয়ের বয়সী মেয়েসহ ৪ সন্তানের মা'কে কেন তালাক নোটিশ করলেন এমন প্রশ্ন করলে জবাবে অভিযুক্ত আনোয়ার বলেন, আমার স্ত্রী তুমুল ঝগড়াটে এবং বড় মেয়ের বেপরোয়া চলাফেরায় সে সাপোর্ট করে। তার (লিমা) বিরুদ্ধে তার নিজের বাবারও লিখিত অভিযোগ রয়েছে। আমি ছোট বাচ্চার জন্য ১ হাজার /১৫শ' টাকা করে মাসে মাসে দেই। 

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ইউপি সদস্য মোঃ বশির উদ্দিন বলেন, কোর্টের একটা নোটিশ আমার বাসায় পিওন দিয়ে গেছে। পরে জানতে পেরেছি যে তাদের সংসারে স্বামী-স্ত্রী'র মধ্যে অশান্তি চলছে। 

আঙ্গারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ গোলাম মর্তুজা বাংলাদেশ মোমেন্টসকে বলেন, লিমা নামের এক গৃহবধূর যৌতুকের অভিযোগ পেয়ে স্বামী-স্ত্রী উভয়কেই পরিষদে আসার জন্য বলেছি।