ফেনীতে মুহুরী নদীর পানিতে ডুবে গেছে আমনের বীজতলা, ভেসে গেছে শতাধিক পুকুরের মাছ 

সারাদেশ
  © টিবিএম ফটো

ফেনীতে টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আমনের বেশীরভাগ বীজতলা ডুবে আছে পানির নিচে। এতে সহসা পানি না নামলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আমন চাষিরা। ফলে এ দুটি উপজেলায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার আশঙ্কা করছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।

সরেজমিন দেখা যায়, মুহুরী নদীর বাঁধের তিনটি স্থানে ভাঙ্গনের ফলে প্লাবিত হয়েছে ২০ টি গ্ৰাম। এতে করে উত্তর বরইয়া, দক্ষিণ বরইয়া, বিজয়পুর, উত্তর দৌলতপুর ও দক্ষিণ দৌলতপুরসহ দুই উপজেলার বিস্তীর্ণ জমি পানির নিচে। এতে রয়েছে আমনের অনেক বীজতলা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, বাঁধ ভেঙে ফুলগাজী ও পরশুরামের ডুবে গেছে আমনের বীজতলা ও ফসলি জমি। পানিতে ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। এ দুটি উপজেলায় অন্তত ১০ হেক্টর আমন বীজতলা ও ১২০ হেক্টর রোপা আমনের জমি পানির ডুবে আছে পানির নিচে।  
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগিয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান ভূঁইয়া জানান, টানা বর্ষণে মুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে বাঁধের তিনটি স্থানে ভেঙে ফুলগাজী ও পরশুরামের মোট ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। টেকসই বাঁধ মেরামতের জন্য ৭৩১ কোটি টাকার কাজ শুরু হবে নিরীক্ষা শেষে। নদীর পানি কিছুটা কমলে ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হবে।
ফুলগাজীর উপজেলার কৃষক আকরাম হোসেন জানান, তিনি এক একর জমিতে আমনের চারা রোপণ করেছেন৷ অতিবৃষ্টি ও বাঁধভাঙা পানিতে তার জমি তলিয়ে গেছে৷

উজান থেকে নেমে আসা পানি ও টানা বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এ দুটি উপজেলার মাছ চাষিরা। ফেনী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলায় বাঁধভাঙা পানিতে অন্তত তিন শতাধিক পুকুর থেকে মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মৎস্য চাষিদের অবকাঠামো। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনার আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরশুরামের মৎস্য চাষি আকবর হোসেন জানান, তার তিনটি পুকুরে অন্তত ১০ লাখ টাকার পাঙাশ ও তেলাপিয়া মাছ ছিল। বাঁধভাঙা পানিতে পুকুরের পানি ভেসে মাছ চলে গেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. একরাম উদ্দিন বলেন, সহসাই পানি না নামলে এসব জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়া ১০ হেক্টর আমন বীজতলা ও ১৫ হেক্টর সবজিক্ষেত পানিতে ডুবে আছে৷

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, উজানে বৃষ্টি হওয়ার কারণে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। উজানে বৃষ্টি বন্ধ হলে প্লাবনও বন্ধ হয়ে যাবে। পানির অতি গতির কারণে বাঁধগুলোতে সংস্কার কাজ করা যাচ্ছে না। তিনটি স্থানে পানির গতি কমে গেলে বাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।