খোয়াই নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ, শহরে জলাবদ্ধতা

হবিগঞ্জে
  © টিবিএম ফটো

হবিগঞ্জের পুরাতন খোয়াই নদীর বিভিন্ন অংশে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় বন্ধ হয়ে গেছে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। এতে সামান্য বৃষ্টি হলেই শহরজুড়ে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। নদীর অনেক অংশ দখল-দূষণের ফলে নালায় পরিণত হয়েছে। দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ভুক্তভোগীরা।

পুরাতন খোয়াই নদীর শায়েস্তানগর শাহজালাল মসজিদ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মসজিদসংলগ্ন কালভার্টের নিচ থেকে গাউছিয়া একাডেমি পর্যন্ত নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে। গত ২২ বছর ধরে এভাবে বাঁধ দিয়ে অবৈধভাবে মাছ চাষ করা হলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে মুখ খোলার সাহস পায় না কেউ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শায়েস্তানগর এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহিম মোল্লা তাঁর সহযোগীদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পুরাতন খোয়াই নদী দখল করে মাছ চাষ করে আসছেন। বাঁধ দিয়ে মাছ চাষের ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলেও এর বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ মুখ খোলে না।

স্থানীয়রা বলছেন, শুধু এ স্থানেই নয়, পুরাতন খোয়াই নদীর মাছুলিয়া অংশ থেকে চৌধুরী বাজার পর্যন্ত আরও বেশ কয়েকটি স্থানের অবস্থা একই। একদিকে নদী দখল করে গড়ে উঠছে বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অন্যদিকে নদীতে বাঁধ দিয়ে চলছে অবৈধ মাছ চাষ। যে যার মতো গিলে খাচ্ছে নদী। দেখার কেউ নেই।

স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, শহরের বাসাবাড়ির পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম পুরাতন খোয়াই নদী। একটা সময় নদীতে গিয়ে পানি পড়লেও এখন আর সেটা হয় না। উল্টো নদীর পানি ফুলেফেঁপে বাসাবাড়িতে উঠে যায়। এর অন্যতম কারণ নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ ও দখল-দূষণ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি এখনই ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আগামীতে তাদের আরও বিপর্যয় আসতে পারে।

আরকে স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, যারা নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করে তারা এলাকার প্রভাবশালী। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলে না। প্রশাসনও ব্যবস্থা নেয় না।

কলেজছাত্রী আসমা আক্তার জানান, একদিন বৃষ্টি হলে সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও বাসাবাড়ির সামনে থেকে পানি নামে না। যে কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।

অভিযুক্ত আব্দুর রহিম মোল্লা জানান, তিনি প্রায় ২০ থেকে ২২ বছর ধরে নদীতে মাছ চাষ করে আসছেন। তবে নদীর কোথাও কোন বাঁধ দেননি।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিম বলেন, নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষের বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। তারা জেলা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে বিষয়টি দেখছেন। পৌর এলাকায় যাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হয়, সে জন্য তিনি তার পৌর পরিষদকে সঙ্গে নিয়ে দিনরাত চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে দাবি করেন।