শ্রীমঙ্গলে চা বাগানে পালিত হচ্ছে হিন্দু ধর্মের ‘ঝুলনযাত্রা’ উৎসব

শ্রীমঙ্গল
  © সংগৃহীত

হিন্দু ধর্মে বারো মাসে তের পার্বণ। তার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হল ঝুলনযাত্রা । মনে করা হয়, রাধা -কৃষ্ণের লীলা হলো ঝুলনযাত্রা। এদিন নবদ্বীপ, মায়াপুর, মথুরা, বৃন্দাবনসহ গোটা দেশের বিভিন্ন স্থানে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হয় এই উৎসব। 

একইভাবে দীর্ঘকাল ধরে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ঝুলনযাত্রা উৎসব পালন করে আসছে চা বাগানের শ্রমিকরাও।

সুপ্রাচীন এই উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা সামাজিক ও পৌরাণিক তাৎপর্য। 

শ্রীকৃষ্ণের ভক্তদের কাছে ও বাংলার এক ঐতিহ্যবাহী উৎসব ঝুলনযাত্রা একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। তবে বর্তমানে শহরাঞ্চলে এই উৎসবের রেশ ক্ষীণ হয়ে আসছে। কিন্তু আজও চা বাগানে  বাংলার এই ঐতিহ্য টিকে রয়েছে। 

ঝুলনের আরেক অর্থ দোলনা। ওইদিন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্য দোলনা সাজানো হয়। আর সেই দোলনায় বসিয়ে শ্রীকৃষ্ণ ও রাধাকে দোল দেওয়া হয়। ঝুলনযাত্রার দিন শ্রীকৃষ্ণ এবং রাধার প্রেমের পূর্ণ প্রকাশ ঘটেছিল বলে অনুমান করা হয়।

বৃন্দাবনে রাধা-কৃষ্ণর শৈশব-স্মৃতি, বিশেষতঃ সখা-সখীদের সঙ্গে দোলনায় দোলার প্রেমলীলাকে কেন্দ্র করে দ্বাপরযুগে এই ঝুলন উৎসবের সূচনা হয়েছিল।

এর পর থেকে এখনও গৌড়ীয় বৈষ্ণবদের এটা প্রিয় অনুষ্ঠান। তাই এই দিনে কই  একটি চা বাগানে বিশেষ কিছু কাজের মাধ্যমে শ্রীকৃষ্ণের পুজো করে থাকে । 

এছাড়া ভক্তিমূলক গান, নাচের আয়োজন করা হয় এই দিন। তবে সনাতন ধর্মের এই গুরুত্বপূর্ণ উৎসব উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গায় নামসংকীর্তন হয়। এমনকি মেলাও বসে ।

মনে করা হয়, ঝুলন উৎসবে রাধা-কৃষ্ণের পুজো করলে সংসারে সুখ-সমৃদ্ধি ভরে ওঠে। এদিন রাধা-কৃষ্ণকে হলুদ বস্ত্র দিয়ে সাজিয়ে, হলুদ ফুল উৎসর্গ করা শুভ। এছাড়াও কৃষ্ণকে ময়ূরের পালক দিয়ে সাজিয়ে, ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালানো হয়। আর অবশ্যই এদিন পুজোর আগে রাধা-কৃষ্ণের পায়ে তুলসি পাতা অর্পণ করে থাকেন।

তবে এ বছর এই ঝুলনযাত্রা শুরু হচ্ছে আগামী ২৭ অগাস্ট রবিবার। আর বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুসারে এ বছরে শনিবার ২৬ অগাস্ট একাদশী তিথি শুরু হচ্ছে শনিবার। আর সেদিন একাদশী শুরু হচ্ছে রাত ১২.১০ মিনিটে। এই পঞ্জিকা অনুসারে রবিবার রাত ৯.৩৩ মিনিট পর্যন্ত থাকবে একাদশী তিথি। আবার গুপ্ত প্রেস পঞ্জিকা অনুযায়ী শনিবার ২৬ অগাস্ট সন্ধ্যা ৭ টা ৪ মিনিটে লাগছে একাদশী। একাদশী তিথি থাকবে ২৭ অগাস্ট বিকেল ৫.১৪ মিনিট পর্যন্ত।