ফটিকছড়িতে  গৃহবধু মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে মামলা

ফটিকছড়ি
  © সংগৃৃহীত

চট্টগ্রামে ফটিকছড়ির দাঁতমারায় নাহিদা আক্তার ঋতিকা (১৮) নামে এক গৃহবধূ মৃত্যুর ঘটনায়  পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।  

আজ  মঙ্গলবার চট্টগ্রামের চীফ জ্যুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হক এর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিহতের মা জেসমিন আক্তার। আদালত শুনানী শেষে মামলাটি আমলে নিয়ে হত্যাকান্ডের বিষয়ে ভূজপুর থানায় কোন মামলা বা জিডি হয়েছে কিনা!পুলিশ এ বিষয়ে কি ব্যবস্থা নিয়েছে সে ব্যাপারে আগামী সাত কার্য দিবসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে । বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট ইউছুফ আলম মাসুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলায় ৫ জনকে আসামী করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর  বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপজেলার ভূজপুর থানাধীন দাঁতমারা ইউনিয়নের হোসেনেরখীল গ্রামে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। নাহিদার স্বামীর বোন কাজল নাহিদা আত্মহত্যা করেছে বলে দাবী করলেও  তার এ দাবী মানতে রাজি নয় নাহিদার পরিবার। 

নিহত নাহিদার বাবার বাড়ী ফেনীর ছাগলনাইয়া থানার দক্ষিণ বল্লবপুর গ্রামে। নাহিদার স্বামী মিজানুর রহমান বাবলু মালেয়শিয়া প্রবাসী। দক্ষিন বল্লবপুর মান কাজির বাড়ীর শাহ আলমের মেয়ে নাহিদা তিনবোন এক ভাইয়ের মধ্যে  ২য়।  
নাহিদার মা জেসমিন আক্তার জানান, দুই বছর আগে প্রবাসী মিজানুর রহমানের সাথে নাহিদার বিয়ে হয়।  বিয়ের পর থেকে শশুর বাড়ীর লোকজন নানা অজুহাতে নাহিদাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। এ নিয়ে কয়েকদফা সালিশী বৈঠকও হয়।  পরে নাহিদার স্বামী নাহিদাকে ফটিকছড়ির ভূজপুর থানাধীন দাঁতমারা ইউনিয়নের হোসেনেরখীল গ্রামে নিয়ে আসে। সেখানে মিজানের ভগ্নিপতি চা দোকানদার সামশুর তত্বাবধানে সিঙ্গাপুরী নামে এক লোকের বাড়ীতে ভাড়া বাসা নিয়ে দেন। সেখানে মুসাইদা জান্নাত মুশকান নামের ৭ মাস বয়সী এক কন্যা সন্তান নিয়ে নাহিদা বসবাস করত। নাহিদার মা জেসমিন বলেন, গত বৃহস্পতিবার সকালে নাহিদার সাথে তারা ভিডিও কলে কথা বলেন। কিন্তু বিকাল ৩ টার পর থেকে নাহিদার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।  এর পর আর কোন যোগাযোগ করতে পারেনি।  বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নাহিদার স্বামী মিজানের চাচাত ভাই জুয়েল ফোন করে নাহিদার বাবাকে জানান নাহিদা অসুস্থ।  জুয়েল তাদেরকে ছাগলনাইয়া হাসপাতালে যেতে বলেন।  ফোন পেয়ে নাহিদার মা বাবা ছাগলনাইয়া উপজেলা হাসপাতালে গিয়ে নাহিদার মরদেহ দেখতে পান। 

এরপর ছাগলনাইয়া থানা পুলিশের সহায়তায় নাহিদার মরদেহ ফেনী সদর হাসপাতালে নেয়া হয়।  শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে নাহিদার মরদেহ তার বাপের বাড়ীতে দাফন করা হয়।

এদিকে সুরতহাল  রিপোর্টে নাহিদার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।  ঘটনার পর থেকে নাহিদার ৭ মাসের শিশু কন্যার কোন হদিস পাচ্ছেনা নাহিদার পরিবার। মুসকান নামের এ শিশু কন্যা বেঁচে আছে কিনা তাও তাঁরা নিশ্চিত নন।  এদিকে ঘটনার পর মৃত নাহিদার স্বামীর বোন  কাজলের স্বামী সামশু ও তার পরিবারের সবাই পলাতক রয়েছে।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ