শ্রীমঙ্গলের মাহাতো কুর্মী সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব কারাম পূজা পালিত 

মৌলভীবাজার
পূজার একাংশ  © সংগৃৃহীত

আদিবাসী সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব কারাম পূজা। বংশ পরম্পরায় যুগ-যুগ ধরে প্রতি-বছরের, ঝাকজমকপূর্ণভাবে মাহাতো কুর্মী এই কারাম উৎসব পালন করেছে।

আজ শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর ) মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোণ ইউনিয়নের সাইটুলা গ্ৰামে ঐতিহ্যবাহী এ কারাম উৎসব পালন করেছেন "মাহাতো কুর্মী" সম্প্রদায়ের লোকজনরা। "মাহাতো কুর্মীর" আদিবাসীবৃন্দের আয়োজনে ও জেলার সকল "মাহাতো কুর্মী" আদিবাসীদের সার্বিক সহযোগিতায়, মৌলভীবাজার, এই জেলা মিলিয়ে পালন করে থাকে কারাম উৎসব। লাখাই ছড়া, সাতগাঁও, টিপরাছড়া, সাইটুলা, "মাহাতো কুর্মীর" সম্প্রদায়ের আদিবাসীরা ৪ টি নৃত্যের দল অংশ নেয়। কারাম উৎসবে তারা তাদের নিজেদের ভাষা, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্য তুলে ধরেন।

কারাম একটি গাছের নাম। আদিবাসী "মাহাতো কুর্মী" জাতি গোষ্ঠীর মানুষের কাছে এটি একটি পবিত্র গাছ। মঙ্গলেরও প্রতীক। পূজার সময় আদিবাসী ''মাহাতো কুর্মীর'' দুই ভাইয়ের ধর্মা ও কর্মার জীবনী তুলে ধরা হয়। তারা বিশ্বাস করেন ধর্ম পালন করায় ধর্মা রক্ষা পান সকল বিপদের হাত থেকে। আর কর্মা ধর্ম পালন না করায় তার ক্ষতি হয়। কারামডাল অস্থায়ী মণ্ডপে পুঁতে রেখে পূজা-অর্চনা আর নাচ-গান ও কিচ্ছা বলার মধ্য দিয়ে প্রতিবছর কারাম উৎসব পালিত হয়।

এ সময় পুরো,  মৌলভীবাজার, এলাকার "মাহাতো কুর্মীর'' আদিবাসী সম্প্রদায়ের   মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়। পূজা শেষে পরদিন কারাম ডাল উঠিয়ে , তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সের নারী-পুরুষ নেচে গেয়ে গ্রামের বাড়ি-বাড়ি ঘুরে পুকুরে জলে বিসর্জন দেন।" মাহাতো কুর্মী" এ কারাম উৎসবের জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় থাকেন। এ উৎসবে ''মাহাতো কুর্মীরা'' সাংস্কৃতিক দল তাদের নাচ-গান পরিবেশন করেন।

আদিবাসী সম্প্রদায়ের  আকাসের সঞ্চালনায় আয়োজিত উৎসবে প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন, শ্যামল মাহাতো কুর্মী সামর্থ ও দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন নারায়ণ মাহাতো কুর্মী  । 

এতে বিশেষ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- শ্রী- ভানু লাল রায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, মিতালী দত্ত, এবং ৮ নং কালিঘাট ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান-শ্রী প্রানেশ গোয়াল, প্রমূখ 
উল্লেখ্য, সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধানে ছিলেন শ্যামল মাহাতো কুর্মী সামর্থ। উৎসব শেষে আদিবাসী সাংস্কৃতিক দলগুলোকে পুরস্কৃত করা হয়।