ছেলের কুঁড়ালের আঘাতে বাবার মৃত্যু

কালাই
  © সংগৃৃহীত

জমি-জমার জেরে জয়পুরহাটের কালাইয়ে ছেলের হাতের কুঁড়ালের আঘাতে বাবা আব্দুল আলিম (৪২) চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যায়। গত সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের আনিপুকুর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আজ বুধবার (২২ নভেম্বর) বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।এ ঘটনার পর থেকে ছেলে পলাতক রয়েছেন। 

নিহত আব্দুল আলিম উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের আনিপুকুর এলাকার মৃত আবু বক্করের ছেলে। 

নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত আব্দুল আলিমের প্রথম স্ত্রী তার একমাত্র ছেলে রেজভী আহম্মেদকে রেখে অন্যত্র পালিয়ে গিয়ে বিবাহ করেন।এরপর বাবা আব্দুল আলিম আরেকটি বিবাহ করেন।তখন থেকে ছেলে রেজভী তার নানার বাড়ী একই জেলার পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা ইউনিয়নের শেকটা গ্রামে বসবাস করেন। রেজভীর বর্তমান বয়স ১৯ বছর। সে বাবার নিকট থেকে জমির ভাগ নিতে প্রায় বাড়ীতে আসেন।

এরই জের ধরে রেজভী গত সোমবার সন্ধ্যায় তার স্ত্রীকে সাথে নিয়ে আনিপুকুর বাবার বাড়ীতে আসেন।রাত দেড়টার দিকে রেজভী ও তার স্ত্রী মিলে ঘরে ঢুকে কুঁড়াল দিয়ে প্রথমে বাবাকে আঘাত করেন। এ সময় আব্দুল আলিমের স্ত্রী তার স্বামীকে বাঁচাতে গেলে তাকেও কুঁড়াল দিয়ে আঘাত করেন। একপর্যায়ে রাতেই রেজভী তার স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর প্রতিবেশীরা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।

তাদের অবস্থার অবনতি হলে রাতেই চিকিৎসকরা তাদের দুজনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় আব্দুল আলিম আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টায় মারা যান।আর তার স্ত্রী তাছলিমা বেগম গুরুতর আহত অবস্থায় একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

স্থানীয় ইউপি সদস্য ও নিহতের ভগ্নিপতি হেলাল উদ্দিন বলেন,আলিমের ছেলে প্রায়ই জমির ভাগ নিতে এসে বাবার সাথে ঝগড়া-বিবাদে জড়িয়ে যেত। এরআগে আলিম আমাকে এ বিষয়ে অবগত করছিল।আমি তাকে অনেক বুঝিয়েছি।কারো কথা না শুনে সোমবার রাতে এসে তার বাবা ও সৎ মাকে কুঁড়াল দিয়ে আঘাত করেছে।আজ জমির জন্যই ছেলের হাতে বাবার প্রাণ গেল।এই ছেলের কঠিন বিচার দাবী করছি। 

বাজারের মুদি দোকানি আতিকুর রহমান বলেন, দোকানের পাশেই তাদের বাড়ী তাই গভীর রাতে তাদের চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পাই।ওঠে গিয়ে দেখি,ঘরের ভিতরে আলিম ও তার স্ত্রী মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পরে আছে। তখন আমি জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশকে জানাই।এরপর কালাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।   

কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াসিম আল বারী বলেন,চিকিৎসাধীন আলিমের মারা যাওয়ার খবর আজ সকালে পেয়েছি।মৃতের স্বজন থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন বলে জানা যায়।