নোয়াখালীতে মাদ্রাসা ছাত্রকে ধর্ষণ মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা, থানায় অভিযোগ করে সুষ্ঠু তদন্তের দাবী 

নোয়াখালী
অভিযুক্ত যুবক মারুফ হোসেন মাহি  © টিবিএম ফটো

নোয়াখালী সদর উপজেলার কালাদরাপ ইউনিয়নের চরকরমূল্যা নুরুল উলম দাখিল মাদ্রাসর নবম শ্রেণির আবদুল্লা আল মাহমুদ নামের এক  মাদ্রসা ছাত্র(১৭) কে ধর্ষণ মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানহানিকর মন্তব্যের প্রতিবাদে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

রোববার (৩রা ডিসেম্বর) ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড উত্তর শুল্লুকিয়া গ্রামের ওই মাদ্রাসা ছাত্রের পিতা মোহাম্মদ মুইন উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযুক্তরা হলো- ইউনিয়নের উত্তর শুল্লুকিয়া গ্রামের কলিম উদ্দিন ব্যাপারী বাড়ির মো. বেলালের ছেলে মারুফ হোসেন মাহি(১৭) এবং একই বাড়ির আবদুস সালামের ছেলে হৃদয় (১৭)।

বাদী মোহাম্মদ মুইন উদ্দিন বলেন,  আমার ছেলে আবদুল্লা আল মাহমুদ চরকরমূল্যা নূরল উলম দাখিল মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণির ছাত্র। এক বছর পূর্বে আমার ছেলের সাথে ৬ষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া একটি মেয়ের সাথে সম্পর্ক হয়। মাদ্রাসার ড্রেস পরিহিত একটি যৌথ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখতে পেয়ে আমরা তাকে খুব শাসন করি। শাসন করার পর ছেলেটি ঐ মেয়ের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে। কিন্তু এজাহারে উল্লেখিত মারুফ হোসেন মাহি (১৭) নামের একটি যুবক আমার ছেলেকে প্রস্তাব দেয় ঐ মেয়ের সাথে তার সম্পর্ক করিয়ে দিতে। না হলে টাকা দিতে হবে,টাকা না দিলে ছবি ছড়িয়ে দিবে। দীর্ঘদিন থেকে এভাবে আমার ছেলেকে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে। কিন্তু আমার ছেলে এতে অপারগতা পোষণ করে এবং তাকে এড়িয়ে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২০ নভেম্বর উত্তর শুল্লুকিয়া কলিম উদ্দিন ব্যাপারী বাড়ির সামনে মারুফ হোসেন মাহি ও হৃদয় হোসেন নামের ২ যুবক আমার ছেলের উপর অতর্কিত হামলা করে। এছাড়াও অভিযুক্তরা গত ২১ নভেম্বর এক বছর আগের তোলা ওই ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে অশালীন মন্তব্যের মাধ্যমে প্রকাশ করে। বর্তমানে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই মেয়ের সাথে আমার ছেলের নাম জড়িয়ে মিথ্যা ও আপত্তিকর বিভিন্ন কথা-বার্তা লিখে আমাদের পরিবারের সম্মান হানী করে। 

এছাড়াও গত (১৮ই নভেম্বর) একটি কুচক্রী মহল 'করমূল্যা উত্তর বাজার ফেমাস কোচিং সেন্টারে ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই ছাত্রী (১৩) কে ধর্ষণ করার মিথ্যে অভিযোগ করা হয় আমার ছেলের বিরুদ্ধে।  যাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপ্রাপ্ত বয়স্ক এই ছেলে-মেয়েকে আইন বহির্ভূত ভাবে বিবাহ দেওয়ার পাঁয়তারা করছে। 

তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, প্রতিকার চেয়ে আমি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহদাৎ উল্যাহ সেলিমের নিকট গেলে তিনি বয়স বাড়িয়ে দিয়ে কোর্ট এভিডেভিডের মাধ্যমে বিবাহ সম্পাদনের পরামর্শ দেন। আমি চেয়ারম্যান সাহেবের এই প্রস্তাবটি রাষ্ট্রীয় আইন বহির্ভূত বলে প্রত্যাখ্যান করে চলে আসি। 

পরোক্ষণে চেয়ারম্যান সাহেবের সহযোগিতা নিয়ে মেয়ের ভাই বাদশা আলম সুধারাম মডেল থানায় আমার ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মিথ্যে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এছাড়াও সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিয়ে একাধিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ করেন। এতে আমাদের মানহানী হয়। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবী করছি।  

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ৯নং কালাদরাপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহদাৎ উল্যাহ সেলিম বলেন, তারা তো কোনো সমঝোতা চাচ্ছে না। তারা মেয়ের পক্ষকে টাকা পয়সা দিতে চায়। ইজ্জতের দাম কি টাকা পয়সা নি? আমি বলেছি বিষয়টি সামাজিকভাবে মীমাংসা করে নিতে। কোর্ট এভিডেভিড করে বিবাহ সম্পাদনের বিষয়টি সত্য নয়।

সুধরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত ) মিজানুর রহমান পাঠান বলেন, অভিযোগটি এখনো হাতে পাই নি। পেলে খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।