নিম্নমানের আলুর বীজে গজায়নি কোনো চারাগাছ; ক্ষতির সম্মুখীন কৃষকেরা

কালাই
নিম্নমানের আলুর বীজে জন্মায়নি আলুর চারা।  © বাংলাদেশ মোমেন্টস

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ক্ষেতে আলু রোপণের ১৫/২০ দিনেও গজায়নি কোনও চারা। মাঠের জমির বেশিরভাগ অংশই চারাবিহীন অবস্থায় খালি পড়ে আছে।এ তে কৃষকরা চলতি আলু মৌসুমে চরম ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের দাবি, স্থানীয় আলুবীজ ব্যবসায়ীরা এবার বীজ সঙ্কটের সুযোগ নিয়ে খাবার আলুর বস্তায় সিল ও ট্যাগ লাগিয়ে বীজআলু হিসাবে বিক্রি করে কৃষকদের সাথে প্রতারণা করেছেন। এতে করে ভুক্তভোগী কৃষকরা এবছর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে ভুক্তভোগীরা এখনও উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি বরাবরে কোনো অভিযোগ করেননি।  

বুধবার সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার জিন্দারপুর ইউনিয়নের করিমপুর গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেনের ৫ বিঘা, পৌর এলাকার মন্সিপাড়ার কৃষক আলি আনসার চপলু'র ৩ বিঘা, গোলাপের ১ বিঘা, পূর্বপাড়ার কৃষক মোহাতাব উদ্দীনের ৫ বিঘা, আজিজুল ইসলামের ৩ বিঘা, সরদারপাড়ার আব্দুল কুদ্দুসের ২ বিঘা, রুপচাঁন মিয়ার ৮ বিঘাসহ আরো অনেক কৃষকের রোপণ করা মিউজিকা জাতের আলুর ক্ষেতে দু’একটি গাছ জন্মালেও পুরো ক্ষেতই প্রায় খালি পড়ে আছে। অথচ তারা নজরুল ইসলাম ও মিজানুর রহমানসহ বিভিন্ন বীজ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকার মিউজিকা জাতের আলুবীজ কিনেছিলেন। যা তারা ১৫ দিন আগে ২৭ বিঘা জমিতে রোপণ করলেও ১০ ভাগ চারাও গজায়নি।

ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, এ পর্যন্ত তাদের জমিতে খরচ হয়েছে প্রতিজনের বিঘাপ্রতি প্রায় ৪৫ হাজার টাকার মত। যা থেকে তারা ১০ মণ আলুও পাবেন না বলে আশঙ্কা করছেন।

করিমপুর গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেন (৪৫) জানান, সে ইটাখোলা বাজারের ডিলার মিজানুরের কথা বিশ্বাস করে ৪২ হাজার টাকার নীলসাগর কোম্পানির বি-গ্রেড আলু বীজ কিনে রোপণ করেছেন। কিন্তু ভেজাল বীজের কারণে চারা গজায়নি। এতে তার লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। তার মত আশপাশ এলাকার প্রায় ৫০-৬০ জন কৃষকেরও আলু রোপণ করে চারাগাছ গজায়নি।

ইটাখোলা বাজারে নীলসাগর কোম্পানির ডিলার মিজানুর রহমান জানান, কৃষকদের সমস্যার বিষয়টি জানার পর তিনি কোম্পানিকে অবগতি করেছেন। তারা আসলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, আসলে এর আগে কোনো বছর এমন ঘটনা ঘটেনি। এবারই প্রথম।  

পাঁচশিরা বাজারের কাজী সীডস এর সাব-ডিলার নজরুল ইসলাম বীজ সরবরাহের কথা স্বীকার করে বলেন,ওই কৃষকদের পাশাপাশি তিনি নিজেও ছয় বিঘা জমিতে মিউজিকা আলু চাষ করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।যারা তার কাছ থেকে বীজআলু কিনেছেন তাদরকে তিনি মূল মালিকের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ নিয়ে দেয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন।

কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জান্নাত আরা তিথি জানান, রোপণের ২০ দিন পরেও জমিতে গাছ না জন্মানোর বিষয়টি তাদের জানা নেই।এব্যাপারে কোনও অভিযোগও তারা পাননি।অভিযোগ পাওয়া গেলে কৃষি কর্মকর্তার সাথে কথা বলে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।