দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

‘ঢাকায় ভোটারদের কেন্দ্রে আনবেন কাউন্সিলররা, নিরাপত্তা দেবে ডিএমপি’

সারাদেশ
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সঙ্গে দুই সিটির কাউন্সিলরদের আইনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা  © সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসছে। এ নির্বাচনে ঢাকার ভোটারদের কেন্দ্রে আনাই চ্যালেঞ্জ মনে করছে পুলিশ। এ ক্ষেত্রে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরা ভোটারদের কেন্দ্রে আনার কাজ করবেন। ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন পুলিশ সদস্যরা। ভোটারদের ভোট দিতে কেউ বাধা দিলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

সোমবার (২৫ ডিসেম্বর)  রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সঙ্গে দুই সিটির কাউন্সিলরদের আইনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। এদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এই সভা হয়। 

সভায় নির্বাচনে ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, গাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ, ভোটে বাধা দিতে চায়—এমন সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কাউন্সিলরদের সহায়তা চেয়েছে পুলিশ।

সভার শুরুতেই বিপ্লব কুমার সরকার আইনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত মতবিনিময় সভার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, এর মধ্যে অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনে ওয়ার্ডভিত্তিক নিরাপত্তাঝুঁকি শনাক্ত করা এবং সমাধানের উপায় বের করা; নির্বাচন ঠেকাতে চলমান নাশকতা ও অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিরোধে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা; অবাধ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুলিশ আরও কয়েকটি বিষয়কে চ্যালেঞ্জ মনে করছে। এর মধ্যে নাশকতা ও অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিরোধ করা; চোরাগোপ্তা হামলা প্রতিহত করা; নাগরিকদের মধ্যে ভীতি সঞ্চারকারীদের শনাক্ত করা; সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারকারীদের শনাক্ত করা; বাসাবাড়ি ও ছাত্রাবাসে গোপনে অবস্থানকারী ও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাউন্সিলদের সহায়তা কামনা করা হয় সভায়। নাগরিকদের ভোটদানে উৎসাহ দেওয়া ও সচেতনতা তৈরিতে কাউন্সিলররা জোরালো ভূমিকা পালন করতে পারে বলে ডিএমপি মনে করে।

সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। এ সময় তিনি জানান, আগামী নির্বাচনকে প্রতিহত করার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ভোট দেওয়া যেমন গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোট না দেওয়াও গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু ভোট ঠেকানো গণতান্ত্রিক অধিকার নয়। যারা ভোট ঠেকাতে আসে, তাদের অপতৎপরতা প্রতিহত করাও সাংবিধানিক দায়িত্ব প্রতিটি নাগরিক ও জনপ্রতিনিধির।’

নির্বাচন উপলক্ষে কোনো সুনির্দিষ্ট ঝুঁকি নেই; নাশকতার আগাম তথ্য নেই বলে উল্লেখ করেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, কাউন্সিলররা জানিয়েছেন, তাঁদের এলাকার লোকজন ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন, সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেবেন। নির্বাচনে ভোটদানে নিরুৎসাহিত ও ভোটদানে কেউ যাতে বাধা দিতে না পারে, সে জন্য কাউন্সিলরদের সঙ্গে মতবিনিময় হয়েছে। তারাও ঐক্যবদ্ধভাবে সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করতে চেয়েছেন এবং আগামী দিনে সবাই যাতে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারে, সে জন্য সবাই বদ্ধপরিকর।

হাবিবুর রহমান আরও বলেন, সম্প্রতি কিছু রাজনৈতিক দলের নাশকতাসংক্রান্ত কিছু কার্যক্রম, অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাসী কার্যক্রম—যেগুলো হচ্ছে, সেগুলো প্রতিরোধে পুলিশের সঙ্গে কাউন্সিলররা একসঙ্গে কাজ করবে।

ডিএমপি কমিশনার জানান, ঢাকা মহানগর এলাকায় দুটি সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ড রয়েছে। সেখানে ১৭২ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। আজকে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আইনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত কার কোন এলাকায় সমস্যা আছে, সেটি তাঁরা পুলিশকে অবহিত করেছেন।