দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  © ফাইল ফটো

আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি কৃষি মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে মন্ত্রণালয় দুটি। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বাণিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, ইতোমধ্যে সরকারপ্রধানের পরিদর্শন ঘিরে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য দুটি মন্ত্রণালয়কে ইতোমধ্যে চিঠি পাঠিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে সদয় অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য চিঠিতে অনুরোধ করা হয়।

অন্যদিকে কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি কৃষি মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর পরিদর্শন ঘিরে দুটি মন্ত্রণালয়ই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

জানা যায়, ডলার সংকট মোকাবেলায় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিচ্ছে। একই সঙ্গে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য চেষ্টা করছে। এসব বিষয়ে আরো জোরদার পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন। 

সূত্রে জানা গেছে, টানা চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই দ্রব্যমূল্য নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে। সামনে রমজান মাস থাকায় সরকারের প্রধান চিন্তা নিত্যপণ্যের দাম। নানা উদ্যোগ নেওয়ার পরও দাম নিয়ন্ত্রণে তেমন কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কেই পরিদর্শনের শীর্ষে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরের ধাপেই রেখেছেন কৃষি মন্ত্রণালয় পরিদর্শন।

প্রসঙ্গ, ২০১৯ সালে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক পরিদর্শন শুরু করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার চতুর্থবার নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করতে যাচ্ছেন। গত আমলে সরকার প্রধানের মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের কারণে সচিবালয়ের কাজে গতি এসেছিল। এবারও একই ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রণালয় বা বিভাগ পরিদর্শনে যাবেন, এমন পরিকল্পনা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সর্বনিম্ন থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভালোভাবে প্রস্তুতি নেন। এ প্রস্তুতিটিই ওই মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত কাজকে কয়েকগুণ এগিয়ে দেয়। প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আলাদা চাঞ্চল্য তৈরি হয়। সাধারণত মন্ত্রী ও সচিবরা সরকার প্রধানের সাহচর্য পান, মন্ত্রণালয়ে গেলে জুনিয়র কর্মকর্তারাও প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি দেখতে পান। এটি তাদের মধ্যে প্রণোদনার মতো কাজ করে।

বাণিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলমান প্রকল্প, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন অগ্রগতি, গত দেড় দশকে মন্ত্রণালয়ের অর্জন, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসহ সামগ্রিক বিষয় সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করতে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

জানা গেছে, নতুন সরকার গঠন হলে সেই সরকারের নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারের সঙ্গে মিলিয়ে কর্মসূচি নেয় মন্ত্রণালয়গুলো। আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারের স্লোগান ছিল ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’।

আওয়ামী লীগের ইশতেহারে দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মতো ১১টি বিষয়ে বিশেষ অগ্রাধিকারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী ইশতেহারে এসব বিষয় লিখিতভাবে থাকলেও সরকার প্রধান প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয়ে নিজে গিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উৎসাহ দিতে চান। যাতে তার সরকারের নেওয়া পরিকল্পনার বিষয়ে সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্তরিকভাবে কাজ করেন।


মন্তব্য