প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নির্মাণ সামগ্রী,খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা

কালাই
  © সংগৃহীত

জয়পুরহাটের কালাইয়ে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের খেলার মাঠ ও বারান্দা দখল করে নির্মাণ সামগ্রী রেখেছে ঠিকাদার। ফলে প্রায় এক বছর ধরে মাঠে শিক্ষার্থীরা খেলাধূলা করতে পারছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়,কালাই উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের একডালা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ কোটি ১০ লাখ ৯২ হাজার টাকা ব্যয়ে ৫ রুম বিশিষ্ট তিনতলা ভবন নির্মাণের কাজ করছে নওগাঁর মাসুদ রানা নামে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যার স্বত্বাধিকারী মো.মাসুদ রানা। নিয়ম অনুযায়ী বিদ্যালয় মাঠে নির্মাণ সামগ্রী না রেখে ঠিকাদার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নির্মাণ সামগ্রী রেখে কাজ পরিচালনা করবেন। অথচ উক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রায় এক বছর ধরে স্কুলের ভবন তৈরির নির্মাণ সামগ্রী ফেলে খেলার মাঠ ও স্কুলের বারান্দা দখল করে রেখেছে। এতে স্কুলের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্ন ঘটছে। একই সঙ্গে স্কুলের শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশ ও ক্লাস রুমে চলাচল করতে পোহাতে হচ্ছে দূর্ভোগ। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকার তরুণরা খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সরজমিন গিয়ে দেখা যায়,স্কুলের নতুন অবকাঠামো তৈরির জন্য ঠিকাদার ইট, পাথর, রড, খোয়া, বালি, কাঠ ও বাঁশসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে এসে স্কুলের সমস্ত মাঠ,বারান্দা দখল করে রেখেছে। শিক্ষার্থীরা বারবার প্রধান শিক্ষককে অভিযোগ করার পরেও এখন পর্যন্ত নির্মাণ সামগ্রীগুলো সরানো হয়নি স্কুল মাঠ থেকে।মাঠ জুড়ে এসব নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখায় স্কুলের শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকদের চলাচলের হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা। প্রায় ঘটছে ছোট ছোট দুর্ঘটনা। নির্মাণ সামগ্রী রাখার ফলে শিক্ষার্থীসহ এলাকার উঠতি বয়সের কিশোর-তরুণরা খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

মোরসালিন,বিল্লাল,জুনায়েদ,মরিয়ম,সুমি,রুমা, পলাশ,রাশেদসহ বেশ কিছু স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানান, স্কুল বন্ধ থাকলে বাড়িতে ভাল লাগেনা।পড়ালেখার পাশাপাশি স্কুলে এসে মাঠে খেলাধূলা করতে পারলে আমাদের খুব ভাললাগে। কিন্তু মাঠ জুড়ে ঠিকাদারের নির্মাণ সামগ্রীর জিনিসপত্র রাখায় আমাদের সারাক্ষণ শ্রেণিকক্ষেই আটকে থাকতে হয়। টিফিন বা অন্য সময় দৌড়ঝাঁপ বা একটু খেলাধুলা করবো সে সুযোগ পাচ্ছিনা। আমরা স্কুলের প্রাধান শিক্ষককে বারবার বলেছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। বলতে গেলেই তিনি বলেন আমাদের স্কুলের কাজ তাই সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মাসুদ রানা জানান,জায়গার সংকুলান না থাকায় নির্মাণ সামগ্রী স্কুল মাঠে রাখা হয়েছে।

একডালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম মন্ডল বলেন,ঠিকাদার স্কুলের নতুন ভবন তৈরি করার জন্য নির্মাণসামগ্রী এনে মাঠে রেখেছে তাতে আপনাদের সমস্যা কি!স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা খেলাধুলা করবে কি করবেনা সেটা আমরা বুঝবো। আপনি ক্ষিপ্ত হয়ে কথা বলছেন কেন ঠিকাদারের কাছে আপনার কোনো স্বার্থ আছে নাকি প্রশ্ন করলে তিনি নরম সুরে বলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অনুরোধের কারণেই অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

একডালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা গীতা রাণী জানান,স্কুলের মাঠে নির্মাণ সামগ্রী রেখে কাজ করার অনুমতি না থাকলেও উন্নয়নের স্বার্থে এক প্রকার বাধ্য হয়েই মেনে নিতে হচ্ছে।

কালাই উপজলা সরকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান,মাঠে নির্মাণ সামগ্রী রাখায় শিক্ষার্থীদের খেলাধুলায় ব্যাঘাত ঘটছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলব,যেন তারা দ্রুত সব কিছু সরিয়ে নেয়।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ