কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে একদিনেই ভেসে এল ২৪ মৃত মা কচ্ছপ
- রবিউল আলম ফাহিম কক্সবাজার প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০২:৪৬ PM , আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০২:৪৬ PM

কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে একদিনেই ভেসে এল ২৪টি মৃত মা কচ্ছপ। অলিভ রিডলি প্রজাতির এই কচ্ছপগুলোরও পেটেও ডিম ছিল বলে জানিয়েছেন সমুদ্র বিজ্ঞানীরা। শুক্রবার কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কের সোনার পাড়া থেকে টেকনাফ সৈকত ও সোনাদিয়া উপকূল কচ্ছপগুলো ভেসে আসে। বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের(বোরি) বিজ্ঞানীরা সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত সরেজমিন পরিদর্শন করে এই তথ্য জানিয়েছেন। সমুদ্র বিজ্ঞানীরা বলছেন সমুদ্র পাড়ে ভেসে আসা ২৪ কচ্ছপের একটিও জীবিত ছিলনা।
এর আগে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার একই সমুদ্র উপকূলে আরও ১৫টি মৃত মা কচ্ছপ ভেসে আসে। এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আজ শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত ৮৩টি সামুদ্রিক মৃত মা কচ্ছপ ভেসে আসার তথ্য জানিয়েছেন বোরির বিজ্ঞানীরা।
সব কচ্ছপই অলিভ রিডলি বা জলপাই রঙা প্রজাতি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের(বোরি) জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম। তিনি জানান, নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রজনন মৌসুমে গভীর সাগর পারি দিয়ে অলিভ রিডলি ডিম পাড়তে আসে। এ সময় তারা প্রজনন ক্ষেত্রে আসার পথে জালে আটকা পড়ে বা অন্য কোনো ভাবে আঘাত পেয়ে মারা পড়ছে। উদ্ধার করা অধিকাংশ কচ্ছপের শরীরে জাল ও রশি প্যাঁচানো।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়ে তরিকুল ইসলাম বলেন, এর মধ্যে স্তন্যপায়ী প্রাণী পরপইস ও ডলফিনের মৃতদেহ ভেসে এসেছে। এভাবে মৃত কচ্ছপ ভেসে আসার বিষয়টি উদ্বেগের ও হতাশার। দুই-একদিনের মধ্যে গভীর সাগরে ঘুরেও বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপর মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান সহজ হবে বলে মনে করেন এই বিজ্ঞানী।
তিনি আরও বলেন, এই মৌসুমে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৭৬ টি অলিভ রিডলি মা কচ্ছপ থেকে ৯ হাজার ১০৭ টি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব ডিম সৈকতের প্রাকৃতিক হ্যাচারিতে সংরক্ষণ করা হয়েছে। তবে এক সপ্তাহ ধরে নতুন করে কোনো কচ্ছপ ডিম দেয়নি বলে জানান তিনি।
বোরির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ বলেন,ভেসে আসা সামুদ্রিক প্রাণীর মৃতদেহের নমুনা সংগ্রহ করে কারণ অনুসন্ধানে কাজ করছে বিজ্ঞানীরা। এসব প্রাণীর বিচরণ ও বাসস্থানে কোনো বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে কিনা- তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা(ডিএফও) মো. সারওয়ার আলম বলেন, বোরির বিজ্ঞানী ও স্থানীয়ের কাছ থেকে জানা যাচ্ছে, জালে আটকা পড়ে অধিকাংশ কচ্ছপ মারা পড়ছে। এ বিষয়ে খোঁজ পেলেই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে বনবিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তাদের জানিয়ে রাখেন।