বান্দরবানে বিশেষ অভিযান: কেএনএফের প্রধান সমন্বয়ক গ্রেপ্তার

বান্দরবান
  © সংগৃৃহীত

বান্দরবানে বিশেষ অভিযানে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক চেওসিম বমসহ সংগঠনটির চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন- র‍্যাব।

আজ রবিবার (৭ এপ্রিল) বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের শ্যারনপাড়া থেকে চেওসিম বমকে আটক করা হয়।

আজ সকালে বান্দরবানে সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ কয়েকজন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা হয়ত জেনেছেন গতকাল রাতে কিছু সন্ত্রাসীকে ধরতে সক্ষম হয়েছে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিছু অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। একটা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’

সেনাপ্রধানের এই বক্তব্যের পরপরই চেওশিম বমকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানালো র‍্যাব। তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিকেল ৩টায় বান্দরবান র‍্যাব কার্যালয়ে ব্রিফিং ডেকেছে সংস্থাটি। 

র‍্যাব বলছে, রোয়াল লিন বম (৫৫) এবং চেওসিম বম (৫৫) বান্দরবানে প্রথম কেএনএফ গঠন করে। তাদের সঙ্গে কেএনএফ প্রধান নাথান বমের আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিতে জঙ্গি নেতা শামীম মাহফুজের সঙ্গে কেএনএফের যে চুক্তি হয়েছিল সেটি হয়েছিল চেওসিম বমের বাসায়। 

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার রাতে তারাবি নামাজের সময় বান্দরবানের রুমা শাখা সোনালী ব্যাংক ও আশেপাশের এলাকা ঘিরে ফেলে শতাধিক সশস্ত্র দুর্বৃত্ত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মসজিদ থেকে ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে ধরে নিয়ে ব্যাংকের ভেতরে মারধর করে তারা। পরে তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। 

এ সময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ১০ পুলিশ ও ৪ আনসার সদস্যকে নিরস্ত্র করে ৮টি চাইনিজ অটোমেটিক রাইফেল, ২টি এসএমজি, ৪টি শটগান ও ৪১৫ রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ সময় ২ পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনার ১৬ ঘণ্টা পর থানচিতে আরও দুটি ব্যাংকে ডাকাতি হয়। 

বৃহস্পতিবার রাতে অপহৃত সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিনকে রুমা বাজার থেকে উদ্ধার করে র্যাব। এর পরপরই থানচি থানা থেকে গোলাগুলির শব্দ শোনেন স্থানীয়রা। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই গোলাগুলি চলে।

স্থানীয়রা বলছেন, থানচি থানার পাশে প্রথম গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। পরে তা থানচি বাজারের কাছে চলে আসে। এ সময় কেএনএফ সদস্যদের সঙ্গে পুলিশের গুলি বিনিময় হয়। পুলিশ জানিয়েছে, থানায় হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে তারা প্রায় ৫০০ রাউন্ড গুলি ছুঁড়েছে। 

এর রেশ কাটতে না কাটতেই মধ্যরাতে আলীকদমের ২৬ মাইল ডিম পাহাড় এলাকায় যৌথবাহিনীর চেক পোস্টে হামলা হয়। সবগুলো ঘটনার সঙ্গেই কেএনএফ জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপর থেকেই পার্বত্য অঞ্চলে অভিযান শুরু করে যৌথবাহিনী।