উখিয়ায় বনকর্মকর্তাকে পরিকল্পিত হত্যা: ৯দিন পর প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

উখিয়া
  © সংগৃহীত

কক্সবাজারের উখিয়ায় পাহাড় কেটে মাটি পাচার বন্ধ করতে গভীর রাতে অভিযানে গিয়েছিল বন কর্মকর্তা সাজ্জাদ। অভিযানে গিয়ে পাহাড় খেকোদের ড্রাম্প ট্রাক চাপায় নিহত হন তিনি। এই ঘটনার প্রধান আসামিকে ৯দিন পর গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ঘটনার পরই বন বিভাগের উখিয়া রেজ্ঞ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মধ্যে ১নং আসামী ছিলেন ড্রাইবার বাপ্পি।

সোমবার (৮ এপ্রিল) ভোররাতে উখিয়ার থানা পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রামে আত্মগোপনে থাকা বন কর্মকর্তা সাজ্জাদ হত্যার প্রধান আসামি বাপ্পিকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

অভিযানের এই বিষয়টি নিশ্চিত করে উখিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেল বলেন, 'আমরা বন কর্মকর্তা সাজ্জাদ হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। তাকে কক্সবাজার নিয়ে এসে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে অন্যসহযোগীদের বিষয়ে জানার চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে আজ (মঙ্গলবার) সকালে প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে।

উল্লেখ্য, রোববার (৩১ মার্চ) ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকায় পাহাড় কেটে মাটি পাচার করছিল একদল পাহাড়খেকো। খবর পেয়ে বনবিভাগের দোছড়ি বিটের কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামান সজলসহ কয়েকজন বনকর্মী ঘটনাস্থলে যান। এ সময় তিনিসহ মোটরসাইকেল আরোহী দুইজনকে পাচারকারীদের মাটিভর্তি ডাম্পট্রাক চাপা দেয়। এতে সাজ্জাদুজ্জামান ঘটনাস্থলে মারা যান এবং মোহাম্মদ আলী নামের এক বনরক্ষী আহত হন।

রেঞ্জ অফিসারের করা মামলার আসামিরা হলেন উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম হরিণমারা এলাকার মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে ও ডাম্পার ট্রাকচালক মো. বাপ্পী (২৩), একই এলাকার সুলতান আহম্মদের ছেলে ছৈয়দ আলম ওরফে কানা ছৈয়দ (৪০) ও তার ছেলে মো. তারেক (২০), রাজাপালং ইউনিয়নের তুতুরবিল এলাকার নুরুল আলম মাইজ্জার ছেলে হেলাল উদ্দিন (২৭), হরিণমারা এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে ছৈয়দ করিম (৩৫), একই এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে আনোয়ার ইসলাম (৩৫), আব্দুর রহিমের ছেলে শাহ আলম (৩৫), হিজলিয়া এলাকার ঠান্ডা মিয়ার ছেলে মো. বাবুল (৫০), একই এলাকার ফরিদ আলম ওরফে ফরিদ ড্রাইভারের ছেলে মো. রুবেল (২৪) এবং হরিণমারা এলাকার শাহ আলমের ছেলে কামাল উদ্দিন ড্রাইভার (৩৯)।

মামলায় অজ্ঞাতনামা আর ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে এজাহারভূক্ত ৫ নম্বর আসামি ছৈয়দ করিম (৩৫)। আর হত্যার নয় দিনের মাথায় মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।  

নিহত সাজ্জাদুজ্জামান সজল (৩০) কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বনবিটের বিট কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে।

ঘটনায় আহত বনরক্ষী মোহাম্মদ আলী (২৭) টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ঝিমংখালী এলাকার আবুল মজ্ঞুরের ছেলে।

ওসি শামীম হোসেন বলেন, ১ এপ্রিল বন বিভাগের উখিয়া রেজ্ঞের এক কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় রেঞ্জার বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫ জনকে আসামি করে থানায় এজাহার দায়ের করেন। পরে পুলিশ মামলাটি নথিভূক্ত করে। এ ঘটনায় প্রধান আসামিসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার হয়েছে।