ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সন্তানকে নিয়ে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা

আত্মহত্যা
  © সংগৃহীত

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার কাজিরগাঁও রেলপথে চট্টগ্রামগামী সাগরিকা ট্রেনের নিচে শিশুকে নিয়ে ঝাঁপ দিয়ে তাহমিনা আক্তার (২৪) নামে এক নারী আত্মহত্যার করেছেন।

আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকালে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার ২০ মিনিটের মধ্যে স্বজনরা আত্মহত্যার খবর পান বলে জানা গেছে।

নিহতরা হলেন, হাজিগঞ্জ উপজেলার ধড্ডা দেওনজি বাড়ির রফিকুল ইসলামের মেয়ে তাহমিনা আক্তার রিমা ও তার দুই বছরের ছেলে আব্দুর রহমান।

রেলওয়ে থানা পুলিশের ইনচার্জ মাসুদ আলম ঘটনাস্থল থেকে মা ও সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

এর আগে গেলো ২৮ মার্চ হাজীগঞ্জ থানায় প্রবাসী স্বামী মাসুদুজ্জামান হাওলাদারের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করে আত্মহননকারী গৃহবধূ তাহমিনা আক্তার। অভিযোগে স্বামী প্রবাসে থাকা অবস্থায় তালাক দেয়ার পরও স্বামী দেশে এসে মুঠোফোনে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। অভিযোগটির তদন্তে কাজ করেন হাজীগঞ্জ থানা উপ-পরিদর্শক আবদুর রহমান।

অন্যদিকে স্বজনেরা বলছেন, স্বামী মাসুদুজ্জামান দেশে এসে বিষয়টি সুরাহা না করে প্রবাসে চলে যাওয়ায় আত্মহননের সিদ্ধান্ত নেয় তাহমিনা। সে বিয়ের পর থেকে হাজীগঞ্জ উপজেলার ধড্ডা গ্রামে বাবার বাড়ীতে বসবাস করে আসছে। তাদের চার বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। স্বামীর বাড়ী একই উপজেলার স্বর্ণা গ্রামের হাওলাদার বাড়ী।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তাহমিনা আক্তার বিয়ের পর থেকেই বাবার বাড়িতে থাকতেন। কারণ বিয়ের পরে বাবার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ধার নিয়ে স্বামীকে কুয়েত পাঠান। স্বামী প্রবাসে থাকা অবস্থায় তাহমিনার সঙ্গে পারিবারিক বিষয় নিয়ে মোবাইল ফোনে বাগ্‌বিতণ্ডা হতো। স্বামী তাঁকে বাবার বাড়ি থেকে অন্যত্র থাকতে বলেন। পরে তিনি হাজীগঞ্জ মকিবাদ চৌধুরী পাড়া দুই সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। কিন্তু স্বামী তাঁকে নানা অপবাদ দিয়ে মোবাইল ফোনে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতেন, ভরণ পোষণও দিতেন না। একপর্যায়ে প্রবাস থাকা স্বামীকে তালাক দেন তাহমিনা। 

এদিকে গত ১৮ এপ্রিল তাহমিনার স্বামী মো. মাসুদুজ্জামান হাওলাদার দেশে আসেন। তাহমিনার অভিযোগ, স্বামী মোবাইল ফোনে তাঁকে প্রাণ নাশের হুমকি দেন। তাঁকে আবার সংসারে ফিরতে বলেন। সংসারে না ফিরলে নিজেদের ঘনিষ্ঠ ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। 

তাহমিনা আক্তার হাজীগঞ্জ থানায় গত ২৮ মার্চ অভিযোগ দেওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব পান উপ–পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহমান। 

এ ব্যাপারে এসআই আব্দুর রহমান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি সুরাহার জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ অভিযুক্ত মাসুদুজ্জামান পরিবারের সঙ্গে বসার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাঁরা রাজি হননি। এক সপ্তাহ আগে মাসুদুজ্জামান দেশে আসেন। কিন্তু বাড়িতে না এসে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে থাকেন। যে কারণে বিষয়টি নিয়ে কোনো সুরাহা করা সম্ভব হয়নি। জানতে পারি তিনি আবার প্রবাসে চলে গেছেন।


মন্তব্য