শাহ জালালের মাজারে শপথ, দুদিনে ১০০ কোটি টাকা ব্যবসা!
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৪, ০৭:২৪ PM , আপডেট: ০৫ মে ২০২৪, ০৭:২৪ PM
ত্রিশ লাখ টাকা বিনিয়োগ করলে দুদিনের মধ্যে শতকোটি টাকা প্রাপ্তির প্রলোভনে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় একটি চক্র। সম্প্রতি এ চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
শাহ জালালের মাজারে শপথ, দুদিনে ১০০ কোটি টাকা ব্যবসা!
বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ৬০ ফিট এলাকায় পিবিআই (ঢাকা মেট্রো-উত্তর) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি বলেন, কয়েন ব্যবসার কথা বলে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় জড়িত আসামি কাজী মো. ইউছুফকে (৪৬) ফেনী সদর থানাধীন খেজুরিয়ার ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যানুযায়ী অপর সহযোগী আসামি মো. মানিক মোল্লাকে (৬৬) চাঁদপুরের চর বাকিলার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ বাসা থেকে গত ২৯ এপ্রিল সকাল পৌনে ৯টার দিকে গ্রেফতার করা হয়।
বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, মামলার বাদী মো. রফিকুল ইসলাম এবং গ্রেফতার কাজী মো. ইউছুফ পূর্বপরিচিত। বাদী মো. রফিকুলকে ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করলে ২ দিনে শতকোটি টাকা পাওয়া যাবে বলে প্রস্তাব দেন আসামি মো. ইউছুফ। পরে রফিকুল ইসলামকে হজরত শাহ জালাল (রহ.) ও হজরত শাহ পরান (রহ.)-এর মাজারে নিয়ে ব্যবসার কথা কাউকে না বলার শপথ করান ইউছুফ।
পরে অন্য আসামিরা রফিকুল ইসলামকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় মিটিং করেন। একপর্যায়ে কয়েন দেখানোর জন্য বাদীকে চাঁদপুরে মানিক মোল্লার বাসায় নিয়ে যান।
বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, সেখানে কয়েকজন মিলে বাদীকে একটি কয়েন বৈদ্যুতিক আলোতে পরীক্ষা করে দেখান। বাদী কয়েন দেখার পর ঢাকায় চলে আসেন। পরে কয়েকজনের উপস্থিতিতে বাদী প্রথমে নগদ ১০ লাখ টাকা মো. মানিককে দেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কয়েনের মালিকানা নিয়ে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তি করেন বাদী ও আসামিরা। একপর্যায়ে কাজী মো. ইউছুফ, মো. মানিক মোল্লা ও গোলাম মাওলা বাদী মো. রফিকুল ইসলামকে জানান যে কয়েনটি ঢাকার ডিপ্লোমেটিক জোনে ওঠাতে হবে। এ জন্য তারা বাদীর কাছে আরও ৫ কোটি টাকা দাবি করেন। তখন বাদী ও আসামিদের মধ্যে দর কষাকষি হয়। তিনি বলেন, একপর্যায়ে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ হয়। বাদী ধাপে ধাপে ৪৯ লাখ টাকা প্রদান করেন।
বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, এর পর বিভিন্ন অজুহাতে বাদীর কাছ থেকে আসামিরা আরও ২ কোটি ২৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
প্রতারণার শিকার হয়েছে বুঝতে পেরে বাদী মো. রফিকুল ইসলাম গত ২৫ মার্চ ঢাকার বিমানবন্দর থানায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। পরে বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ মামলাটি পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) বরাবর পাঠান।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ ঘটনায় পিবিআই দুই আসামিকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।তিনি বলেন, কয়েন চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।