মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৫০

ভৈরবে
  © সংগৃহীত

মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। বাজারে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার ও জিল্লুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে এ সংঘর্ষ হয়।

মঙ্গলবার (৭ মে) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের আনন্দ বাজারে আগানগর গ্রামের দক্ষিণপাড়া এলাকার সরুল্লা বাড়ি ও উত্তরপাড়া এলাকার আফিল উদ্দিন মিয়ার বাড়ি ও ব্যাপারি বাড়ির লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ৫০ জন আহত হন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আগানগর গ্রামের দক্ষিণ পাড়া এলাকার সরুল্লা বাড়ি ও উত্তর পাড়া এলাকার আফিল উদ্দিন মিয়ার বাড়ি ও ব্যাপারি বাড়ির লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত জিল্লুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের পাশে আনন্দ বাজার নামে একটি বাজার রয়েছে। এ বাজারে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার নিয়েও দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলমান রয়েছে। এর আগে ২২ এপ্রিল জিল্লুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অতিথি প্যানেলের নাম নিয়ে এই দুই পক্ষের মধ্যে ঝগড়া বাদে। সেসময় স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বিষয়টি মীমাংসা করে দেন।

এদিকে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বহিষ্কৃত প্রার্থীর পক্ষ নিয়েও এলাকায় উত্তেজনা ছিল। মঙ্গলবার বিকেলে ড্রেজার পাইপ চুরির বিষয় নিয়ে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একই সময় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে শুক্কর মিয়া ও বিএনপির বহিষ্কৃত প্রার্থীর পক্ষে আক্কাছ মিয়া এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। এসময় এই দুই বংশের লোকজন মুখোমুখি হলে তাদের মধ্যে আবার বাগবিতণ্ডা হয়। পরে এক পর্যায়ে দুই পক্ষের লোকজন দা, বল্লম, লাঠি ও ইটপাটকেল নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। এতে দুই পক্ষের ৫০ জন আহত হন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দক্ষিণপাড়া সরুল্লা বাড়ির নেতৃত্ব দেন অত্র ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন। আর উত্তর পাড়া ব্যাপারি বাড়ির নেতৃত্ব দেন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সুমন।

আগানগর গ্রামের সরুল্লা বাড়ির শুক্কুর মিয়া জানান, দীর্ঘদিন যাবত ব্যাপারি বাড়ি ও অফিল উদ্দিন মিয়ার বাড়ির লোকজনদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। মঙ্গলবার আমরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পক্ষ নিয়ে গণসংযোগে গেলে পথের মধ্যে আক্কাস মিয়া তার লোকজন নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। পরে তারা স্থানীয় একটি মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দ্বন্দ্বে জড়ায়।

অপরদিকে ব্যাপারি বাড়ির পক্ষে সাইফুল ইসলাম সুমন বলেন, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন নিয়ে পূর্ব থেকেই দ্বন্দ্ব ছিল। মঙ্গলবার এরই রেষ ধরে শুক্কুর মিয়াসহ সারুল্লা বাড়ির লোকজন মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে।

ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রওশন আরা রিপা জানান, সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিভিন্নভাবে আহত রোগী আসতে থাকে। ৩০ জন আহত রোগী দেখা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪ জনকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত ৬ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। দুই পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ