ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ফাঁস, নারী পুলিশসহ বরখাস্ত ২

সারাদেশ
  © প্রতীকী ছবি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাদারীপুরের এক নারী পুলিশ কনস্টেবলের টাকা লেনদেনের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ওই নারী কনস্টেবল পুলিশে চাকরি দেওয়ার কথা বলে এক চাকরিপ্রত্যাশীর কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এ ঘটনায় দুই পুলিশ কনস্টেবলকে গত বৃহস্পতিবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

ওই দুই পুলিশ সদস্য হলেন তানজিলা আক্তার ও শহিদুল ইসলাম। তানজিলা মাদারীপুর সদর মডেল থানাধীন আদালত পুলিশে কর্মরত ছিলেন। আর শহিদুল ইসলাম মাদারীপুর পুলিশ লাইনসে দায়িত্ব পালন করতেন।

অভিযোগ ও পুলিশ  সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর এলাকার রবিদাসের ছেলে রতন দাস একটি দোকানে কাজ করতেন। সেখানেই পরিচয় হয় পুলিশ সদস্য তানজিলা আক্তারের সঙ্গে। পরে পুলিশ নিয়োগের সময় তানজিলা আক্তার পুলিশে চাকরির আশ্বাস দিয়ে রতনের কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা নেন। বিশ্বাস অর্জনের জন্য তানজিলা কমিউনিটি ব্যাংকের একটি চেকও প্রদান করে। তানজিলা আক্তারের নামে কমিউনিটি ব্যাংকের চেকে তার স্বাক্ষর ও তারিখ রয়েছে। 

টাকা লেনদেন সংক্রান্ত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ সদস্য তানজিলা আক্তার একটি দোকানে এক হাজার টাকার কয়েকটি বান্ডিল নিচ্ছেন।

জানা গেছে, দোকানটি মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে। সেই দোকানেই টাকা লেনদেন হয়েছে। গত বছরের ১ মার্চ টাকা লেনদেন করা হয়।

এদিকে পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার পর রেজাল্ট দিলে চাকরি না হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েন ভুক্তভোগী রতন দাস। উপায় না পেয়ে অভিযোগ করেন পুলিশ সুপার বরাবর। চাকরি প্রত্যাশী রতন দাস বলেন, পুলিশে চাকরি দেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা নিয়েছেন তানজিলা আক্তার নামে এক পুলিশ। কিন্তু তিনি চাকরি দিতে পারেননি। সেই টাকা দিয়ে তানজিলার স্বামী ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ব্যবসা করছেন। টাকা ফেরত চাইলে তিনি বিভিন্ন রকমের টালবাহানা করছেন। আমার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার সময় একটি চেকও দিয়েছিলেন। এরপরও বিভিন্ন অজুহাতে তিনি আমার টাকা ফেরত দিচ্ছে না। এই ঘুষ নেওয়ার সঙ্গে শহিদুল নামে এক পুলিশও জড়িত।

অভিযোগকারী রতন দাসের বাবা রবিদাস বলেন, আমি ধার দেনা করে ছেলের চাকরির জন্য টাকা দিয়েছিলাম তানজিলার কাছে। তিনি চাকরি দিতে পারেননি। এখন টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না। তাই এসপি অফিসে অভিযোগ দিয়েছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত তানজিলা আক্তার কথা বলতে রাজি হননি। তিনি জানান, যা বলার এসপি স্যারকেই বলেছি। আরেক অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম নিজের দায় অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, তিনি টাকা গ্রহণ করেননি।

এ বিষয়ে মাদারীপুরে পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, এই ধরনের একটি ঘটনায় অভিযোগ এসেছে। তদন্ত করে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তাদের দুজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।