চুয়াডাঙ্গায় ফের তাপমাত্রা ছাড়ালো ৪১ ডিগ্রি; অতিষ্ঠ জনজীবন

চুয়াডাঙ্গা
  © ফাইল ছবি

গত এপ্রিলজুড়ে চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বয়ে যায়। মে মাসের কয়েকদিন বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে তাপমাত্রা একটু কমে আসে। তব গত দুদিন ধরে ফের চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তীব্র গরম ও রোদের তাপের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশাচালকরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা-ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে। তবে আগামীকাল রোববার থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান।

আজ শনিবার (২৫ মে) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪২ শতাংশ। যা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

এর আগে গতকাল শুক্রবার (২৪ মে) চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। ওই দিন যা ছিল দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান বলেন, শনিবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামীকাল থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাপমাত্রা কমতে পারে।

এলাকাবাসী জানান বলেন, ফ্যানের বাতাস যেন গায়ে লাগছে না। সব থেকে বাচ্চারা কষ্ট পাছে। রাতে ভ্যাপসা গরমে তারা ছটফট করছে। 

শহরের রিকশাচালকরা জানান, গত দুই দিন যাবত তারা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। তীব্র রোদে রিকশা চালাতে গিয়ে হাঁফিয়ে উঠছেন। কিছুক্ষণ পরপর বিশ্রাম নিচ্ছেন।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ রবিবার নাগাদ খুলনার সাতক্ষীরা ও চট্টগ্রামের কক্সবাজারের মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে। এজন্য শনিবার মধ্যরাতে মহাবিপৎ সংকেত জারি হতে পারে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান।

শনিবার সচিবালয়ে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আমরা বুঝতে পেরেছি, ঘূর্ণিঝড়টি আসন্ন। এখন ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত রয়েছে। আগামী ১ থেকে ২ ঘণ্টার মধ্যে সংকেত ৩-এ চলে যাবে। এটা (সতর্ক সংকেত) রাতে ৪-এর ওপরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাতে বিপদের পর্যায়ে চলে যেতে পারে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস পর্যালোচনা করে আমরা ঝড়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছি। রাত ১২টা-১টা নাগাদ এটা ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি হতে পারে। এমন একটা সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রেখেছি। সার্বিক প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। সেই অনুযায়ী কাজ শুরু করে দিয়েছি। ঘূর্ণিঝড়টিতে সাতক্ষীরা থেকে চট্টগ্রামের কক্সবাজার পর্যন্ত কমবেশি অ্যাফেকটেড হতে পারে। ৭ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে। এজন্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস হতে পারে। রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, উপকূলীয় জেলায় আমাদের প্রায় চারহাজার আশ্রয়কেন্দ্র আছে। এগুলো আমরা প্রস্তুত রেখেছি। খাদ্যের জন্য আমাদের প্রত্যেকটি জেলায় গুদামে পর্যাপ্ত শুকনো খাবারসহ যেসব জিনিস দরকার হবে এগুলো মজুত রেখেছি। প্রয়োজনে ঢাকা থেকে যাতে আরও সাপ্লাই দিতে পারি এজন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।