রিমাল আতঙ্কে সময় পার করছেন রোহিঙ্গারা, হয়নি চোখে পড়ার মত ক্ষয়ক্ষতি
- কনক বড়ুয়া, উখিয়া প্রতিনিধি;
- প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৪, ০৯:৩৮ PM , আপডেট: ২৩ জুন ২০২৪, ০২:৫৩ PM
-12606.jpg)
ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ আতঙ্কে সময় পার করেছেন কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বসবাসরত রোহিঙ্গারা। ২০১৮ সালে এসে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের বসবাস ক্যাম্পে। তাদের ঘরগুলো ত্রিপল ও বাঁশের কাঠামোতে তৈরি হওয়ায় বেশি আতঙ্কে ছিল। তবে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চোখে পড়ার মত তেমন ক্ষয়ক্ষতি দেখা যায়নি।
রোববার (২৬ মে) সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূল প্রচণ্ড উত্তাল হয়ে যায় এবং আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। এমন খবর রোহিঙ্গারা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানার পর থেকে আতঙ্কে সময় পার করেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে খবর পাওয়ার পরপর এবং সকালের দিকে বাতাসের গতি ও বৃষ্টি বাড়তে থাকায় রোববার সকাল ১০ টা থেকেই ক্ষতি কমাতে ক্যাম্পের ব্লকে ব্লকে লাল নিশান উড়িয়ে করা হয়েছে মাইকিং। লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতেও বলা হয়েছে মাইকিংয়ে।
সচেতন মহল বলছে- ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সকালে আন্তর্জাতিক এনজিও সংস্থাসহ ক্যাম্পে মাইকিং করে সবাইকে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া পাহাড়ে ঝুকিঁপূর্ণ বাসিন্দাদের নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্যও বলা হয়েছে। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুদের পাশের স্কুল ও খাদ্য বিতরণ সেন্টারে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।
বেশকিছু রোহিঙ্গারা জানিয়েছে- প্রথম থেকেই যারা পাহাড়ের খাড়া ঢালে ঘর তুলেছে, তারা ঘূর্ণিঝড় আসার খবরে ভূমিধসের ভয়ে ছিল। আর যারা নিম্নাঞ্চলে থাকছে, বন্যায় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা ছিল তাদের মাঝেও। তারা আরো জানায়- ভারী বর্ষণ হলে ভূমিধসের ঘটনা ঘটতো। তবে এখন পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি শুরু হয়নি, বাতাসের গতিও তেমন নেই। যার কারনে এখন পর্যন্ত তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
উখিয়ার ৪ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মনছুর জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত আনতে পারে এমন আশঙ্কার খবরে খুব আতঙ্কে ছিলাম। পাহাড়ের তীরে ঝুপড়ি ঘর হওয়ায় আমাদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিরাপদ স্থানে আশ্রয় না নিলে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রাণহানির আশঙ্কাও ছিল। তবে তেমন কোন ক্ষতি এখনও হয়নি।
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, রেডক্রস, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, দমকল বাহিনী বিভিন্ন দাতা সংস্থার কর্মী বাহিনীসহ রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবীরা প্রস্তুত ছিল দূর্যোগ মোকাবিলায়। আরো প্রস্তুত ছিল আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্যরা। সব মিলিয়ে ছয় হাজার স্বেচ্ছাবেক দায়িত্বরত ছিল। এ বিষয়ে কক্সবাজারের উখিয়া ক্যাম্পে দায়িত্বে নিয়োজিত ১৪-এপিবিএন জানিয়েছে, আতঙ্কে থাকা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সর্তক থাকতে ক্যাম্পের ব্লকে ব্লকে মাইকিং করা হয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পে কর্মরত দাতা সংস্থা সেন্টারগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত ছিল। ভারী বর্ষণের ফলে ভূমিধস হওয়ার আশঙ্কা ছিল। যার কারনে ফায়ার সার্ভিসসহ সব ধরনের প্রস্তুতি ছিল আমাদের।
এ ব্যাপারে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ক্যাম্প প্রশাসন ও কর্মরত সহযোগী সংস্থাগুলোর সমন্বিত চেষ্টায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ভারী বৃষ্টি শুরু হলে উখিয়ার পাঁচটি আশ্রয়শিবিরে ভূমিধসের ঘটনা ঘটতে পারে। তাতে অন্তত ২৭ হাজার পরিবার ঝুঁকিতে পড়বে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে এসব ঘরের লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনতে আমরা প্রস্তুত।