রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইন্টারন্যাশনাল টেররিস্টদের হাব তৈরী হতে পারে- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- কনক বড়ুয়া, উখিয়া প্রতিনিধি;
- প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ০৮:১১ PM , আপডেট: ৩১ মে ২০২৪, ০৮:১১ PM
-13140.jpg)
সহিংসতার ফলে ২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ট মিয়ানমার থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্টি বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। আর তাদের প্রত্যাবাসন দ্রুত শুরু না করলে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ইন্টারন্যাশনাল টেররিস্টদের হাব তৈরী হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। শুক্রবার (৩১ মে) কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালীর ১৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সার্বিক নিরাপত্তা বলয় পরিদর্শন শেষে তিনি এই কথা বলেন।
তিনি আরো জানান- রোহিঙ্গাদের নিয়ে আগে থেকে করা আশঙ্কার কিছু কিছু আলামত দেখা যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। এদের দ্রুত স্বদেশে ফেরত পাঠানো না গেলে অস্ত্রের ঝনঝনানি হতে পারে। অনেক কিছুই হতে পারে। এরমধ্যেই কিছু কিছু আলামত আমরা দেখতে পাচ্ছি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের আরো বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যারা যুদ্ধ করছে তাদের কয়েকজনের আনাগোনা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দেখা যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় ভয়ের বিষয় হচ্ছে আমাদের দেশ কোনো মাদক উৎপাদন করে না। কিন্তু মিয়ানমার থেকে মাদক আসছে অনেক আগে থেকে। এখন ক্যাম্পের কিছু সংখ্যক লোক মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। আমরা তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। একইসঙ্গে অস্ত্র ও খুনে জড়িতদেরও চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নেওয়াই আমাদের মূল কাজ।
তিনি বলেন, আজ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসে নিরাপত্তা নিয়োজিত এপিবিএনের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তাদের চ্যালেঞ্জগুলো জেনেছি। জেনেছি তাদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো। তাদের বলেছি বাংলাদেশ একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছে জঙ্গি-সন্ত্রাস দমনের মধ্য দিয়ে। এপিবিএন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা দিয়ে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার সহযোগিতা করছেন। এপিবিএন তাদের দায়িত্ব পালন করছেন বলেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ এবং নিয়ন্ত্রিত।
মিয়ানমারের কথা ও কাজে মিল নেই বলে মন্তব্য করে আসাদুজ্জামান খান বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানো নিয়ে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। মিয়ানমার একটি অস্থিতিশীল দেশ। ওখানে যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা। বিভিন্ন সময় মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা ফেরত নিয়ে নানা চুক্তি বা সমঝোতায় স্বাক্ষর হলেও তা মিয়ানমারের কারণে অগ্রগতি হয়নি। আশা করি মিয়ানমার দ্রুত সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবেন।
এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা ক্যাম্পটির এ-৭ ব্লকের পাহাড়ী এলাকা পরিদর্শন করেছেন। সেখান থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যান টেকনাফে। ওখানে বিজিবি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি।
পরিদর্শনকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান, এপিবিএন প্রধান সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, ৮ এপিবিএনের অধিনায়ক মো. আমির জাফর, ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক মো. ইকবাল, ১৬ এপিবিএনের অধিনায়ক হাসান বারীসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দমনে এপিবিএন, পুলিশ, বিজিবি ও যাতব একসঙ্গে টহল দেবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। নিয়মিত ক্যাম্পে টহল চলবে, প্রয়োজনে সেনাবাহিনীও সহায়তা করবে।