ঈদ আনন্দ নেই সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে

সুনামগঞ্জে
  © সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় এবারের ঈদে আনন্দ নেই। বন্যাকবলিত এলাকায় ঈদের আনন্দ ম্লান। কোরবানির ঈদকে ঘিরে মানুষের চিরাচরিত ব্যস্ততা দূরে থাক, শুধু শুকনা খাবার খেয়ে বিশেষ দিনটি পার করছেন জেলার নিম্নাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ।

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রামের বাসিন্দা শিশু জেসমিন, রিতা ও পল্লব। সরেজমিন দেখা গেলো, চারদিকে থই থই পানি। কোথাও পা ফেলার সুযোগ নেই তাদের। তাই বাধ্য হয়ে পুরোনো কাপড় পরে বসতভিটার সামনে খেলায় মেতেছে তারা।

শিশু জেসমিন বলে, ‘এই বছরে আমাদের ঈদ বলতে কিছু নেই। কারণ পাহাড়ি ঢলের পানিতে আমাদের ঈদের নতুন জামা ভেসে গেছে।’

দোয়ারাবাজারের নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা খায়রুন বেগম। তিনি বলেন, ‘আশা ছিল তিন মেয়েকে নিয়ে আনন্দে ঈদের দিনটি কাটাবো। সব আয়োজনও চূড়ান্ত ছিল। হঠাৎ পাহাড়ি ঢলে সব আনন্দ জলে ভেসে গেছে। ঈদের আনন্দতো দূরে থাক, ঘরের চুলা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় রান্নার উপায় নেই। দুদিন ধরে চিড়া-মুড়ি খেয়েই দিন পার করছি।’

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘জীবনের প্রথম কোনো ঈদ এত কষ্টে যাচ্ছে। ছেলে-মেয়েদের মুখের দিকে তাকাতে পারছি না।’

একই অবস্থা দোয়ারাবাজারের লক্ষ্মীপুর, রসরাই, সুলতানপুর, হাছনবাহারসহ পাঁচটি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের। পাহাড়ি ঢলের পানিতে মুহূর্তেই তলিয়ে গেছে এসব গ্রামের ঘরবাড়ি, পুকুরের মাছ, ঘরে থাকা ধান-চালসহ আসবাবপত্র। ফলে সব হারিয়ে সড়কে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে। ঈদের দিন যেখানে কোরবানির মাংস খাওয়ার কথা, সেখানে চিড়া-মুড়ি খেয়ে দিন পার করছেন তারা।

তবে ঢলের পানিতে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার কথা বলেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নেহের নিগার তনু। তিনি বলেন, পানিবন্দি মানুষদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরইমধ্যে প্লাবিত হতে শুরু করেছে পৌর শহরের উত্তর আরপিননগর, কালীবাড়ি রোড, পুরানপাড়াসহ বেশকিছু এলাকা।