সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্তিতির অবনতি; পানিবন্দি প্রায় ২০ লাখ
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৪, ০৩:৪৫ PM , আপডেট: ২০ জুন ২০২৪, ০৩:৫৬ PM

ভারত থেকে নেমে আসা ঢল আর অতিবৃষ্টির কারণে সুনামগঞ্জে বন্যা দেখা দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (১৯ জুন) বিকেল থেকে বৃষ্টি কম হওয়ায় সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদী পাড়ের বসতঘর থেকে পানি নামলেও বাড়ছে হাওরের পানি। বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে হাওর এলাকায়। এতে দুর্ভোগে আর নিরাশার মধ্য দিয়ে দিন কাটছে সুনামগঞ্জের মানুষের। গত তিনদিন ধরে জেলার অন্তত ১৫ থেকে ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
সুনামগঞ্জ শহরের সুরমা নদীর পাড় থেকে পানি কিছু কমলেও এখন শহরের বড়পাড়া, তেঘরিয়া, হাজিপাড়া, নতুনপাড়া, বাঁধনপাড়া, হাছননগর, মল্লিকপুর, নবীনগর ও কালীপুর এলাকায় কোমর থেকে হাঁটু সমান পানি রয়েছে। এসব পানি স্থির হয়ে আছে, নড়াচড়া করছে না।
সুনামগঞ্জ শহরতলী ইসলামপুর গ্রামের ইকবাল হোসেন (৩৫) বলেন, ‘ঈদের আগে থেকে এই এলাকায় পানি এসেছে। আমরা চার দিন ধরে বন্যার পানির নিচে তলিয়ে আছি, কেউ দেখে না। সব জায়গাতে পানি থাকায় ঘর থেকে বাইরে যাওয়া যাচ্ছে না। ঘরে খাবার নেই, ওষুধ নেই। আমাদের অসহায়ত্ব দেখার কেউ নেই। আমাদের ত্রাণ লাগবে, খাবার লাগবে। যদি পারেন আমাকে খাবার দেন। আমাদের বাচ্চা কাচ্চার খাবার লাগবে।’
সুনামগঞ্জ পৌরশহরের নতুন পাড়া এলাকার দোলন দাস (৪০) জানান, গত তিন ধরে নতুন পাড়ায় শতশত মানুষ পানিবন্দি। কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। কাজ নেই তাই অনেকের ঘরে খাবারও নেই। কেউ এসে দেখেও না মানুষ কতটা অসহায় হয়ে আছে।
একই এলাকার মিঠুন (৩৭) জানান, পানি এখনও হাটু সমান আবার কোথাও কোমর সমান পানি রয়েছে। আতঙ্ক কাটছেই না। আবার বৃষ্টিও হচ্ছে। বৃষ্টি হলে পানি আরও বেড়ে যায়।
এদিকে এখনও সুনামগঞ্জের সঙ্গে ছাতক, তাহিরপুর ও দোয়ারাবাজার উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে জেলার সব পর্যটন স্পট।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার জানান, ২৪ ঘণ্টায় পানি কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। ভারী বৃষ্টিপাতের আভাস থাকায় পানি আরও বাড়তে পারে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, বানভাসি মানুষকে সহায়তা করতে ইতোমধ্যে সরকারি-বেসরকারি ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। মানুষ এসব কেন্দ্রে ইতোমধ্যে আশ্রয় নিয়েছেন। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে সরকারের দেওয়া ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হচ্ছে। পাশাপাশি রান্না করা খাবারও দেওয়া হচ্ছে। ইউনিয়নে ইউনিয়নে মেডিকেল দল গঠন করা হয়েছে।
তথ্য: এনটিভি