১৪ দিন পর টেকনাফ থেকে বিকল্প পথে সেন্টমার্টিনে নৌযান চলাচল

সেন্ট মার্টিন
  © বাংলাদেশ মোমেন্টস (ফাইল ছবি)

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে মিয়ানমার থেকে গুলি ছোঁড়া ও সীমান্তে সংঘর্ষ বৃদ্ধিতে বেশ কিছুদিন জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিলো। টানা ১৪ দিন বন্ধ থাকার পর বিকল্প নৌপথ ব্যবহার করে ৯টি নৌযান আসা-যাওয়া করেছে।

আজ রবিবার (৭ জুলাই) সকালে এসব নৌযান আসা যাওয়া করে। এর মধ্যে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে ৩টি ট্রলার গেছে। আর সেন্টমার্টিন থেকে শাহপরীরদ্বীপে তিনটি ট্রলার ও তিনটি স্পিডবোট এসেছে।

সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ জানিয়েছেন, রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সেন্টমার্টিন জেটি থেকে ৩টি সার্ভিস ট্রলারের দেড় শতাধিক যাত্রী নিয়ে শাহপরীরদ্বীপের উদ্দেশে যাত্রা দেয়। দেড়শতাধিক যাত্রীবোঝাই এসবি সুমাইয়া, এসবি আল্লাহর দান, এসবি আল-নোমান নামের ট্রলার ৩টি দুপুর ১২টার দিকে শাহপরীরদ্বীপে এসে পৌঁছে।

তিনি আরও জানান, বেলা ১১টার দিকে টেকনাফ থেকে এসবি আবরার হাফিজ, এসবি ওসমান গণি, এসবি রাফিয়া নামের এ তিনটি ট্রলারে শতাধিক যাত্রী, দুইশতাধিক গ্যাস সিলিন্ডার, চাল, ডালসহ কিছু খাদ্যপণ্য নিয়ে যাত্রা দেয়। যা দুপুর ২টার পরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের জেটিতে পৌঁছে।

টেকনাফে অবস্থানরত স্পিডবোট সমবায় সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, সকালে ৩টি স্পিডবোটে ২৫ জন যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিন থেকে শহপরীর দ্বীপে পৌঁছেছে।

সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ জানান, জুন-জুলাই মাসে সাগর বেশি উত্তাল থাকে। এ সময়ে সাগরে যাওয়া নিষেধ আছে। তবে আজ একটু সাগর ঠান্ডা মনে হচ্ছে। এরপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কিছু আটকে পড়া লোকজনসহ খাদ্যসামগ্রী নিয়ে টেকনাফ থেকে ৩েটি সার্ভিস ট্রলার ও সেন্টমার্টিন থেকে ৩টি ট্রলার ও ৩টি স্পিডবোট ছেড়ে গেছে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, মিয়ানমারের সংঘাতের কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু প্রশাসনের সহযোগিতায় বিকল্প পথে দুবার সেন্টমার্টিনে আসা-যাওয়া করে ট্রলার। পরবর্তী সাগর উত্তাল থাকার কারণে বিকল্প পথও বন্ধ হয়ে যায়। অবশেষে রোববার কিছু নৌযান চলাচল শুরু করেছে।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন পর টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে নৌযান চলাচল করছে। আগে মিয়ানমারের অভ্যন্তর হয়ে নৌযানগুলো চলাচল করত। কিন্তু মিয়ানমারের সংঘাতের কারণে এখন সাগরে জোয়ার এলে বাংলাদেশের অভ্যন্তর হয়ে নৌযানগুলো চলাচল করছে। একই সঙ্গে প্রতিটি নৌযানে উঁচু করে জাতীয় পতাকা টাঙানো হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী বলেন, স্বাভাবিক হচ্ছে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে নৌযান চলাচল। এখন পর্যন্ত টেকনাফ-সেন্টমার্টিন বিকল্প রুটে ছয়টি সার্ভিস ট্রলার ও তিনটি স্পিডবোট চলাচল করেছে। আশা করি, এখন সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে আমরা এখনও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। সংকটের অবসান না হওয়া পর্যন্ত টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটের বিকল্প নৌরুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল করতে বলা হয়েছে। মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমরা এমন ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।