সিরাজগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের জন্য দোয়া মাহফিল 

সিরাজগঞ্জ
  © টিবিএম

সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ও আহতদের জন্য দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার দোয়া ও আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মজলিসে শূরার অন্যতম সদস্য সাবেক ছাত্র নেতা মাওলানা মোঃ ছানোয়ার হোসেন, সাবেক ছাত্র নেতা জনাব মোঃ রবিউল ইসলাম, মোঃ আমিনুল ইসলাম সহ আরো অনেকে। 

মাওলানা মোঃ ছানোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, তারা মুখের ফুৎকারে আল্লাহর নুরকে নিভিয়ে দিতে চেয়েছিল, অথচ আল্লাহর সিদ্ধান্ত হলো তার নূরকে বিকশিত করবেনই - আল্ কুরআন। তিনি বলেন, আমাদের ছাত্র সমাজ কঠিন আন্দোলন করে বাংলাদেশকে নতুন স্বাধীনতার স্বাদ এনে দিয়েছে। এজন্য ছাত্র জনতার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। এ জাতি তাদের কথা মনে রাখবে। তিনি বলেন, যারা ছাত্র জনতার উপর গুলি চালিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে তাদের বিচার করতে হবে। তিনি তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন, এবং মহান আল্লাহ যেন তাদের জান্নাত নসিব করেন। 

বিশেষ অতিথি সাবেক ছাত্র নেতা জনাব মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের বীর ছাত্র জনতার সীমাহীন ত্যাগের বিনিময়ে  বাংলাদেশ নতুন করে স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে। এজন্য তিনি বীর ছাত্র জনতাকে স্যালুট দেন। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার ছাত্র জনতার যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিপ্লবী সরকার। এ সরকারকে ছাত্র জনতার আশা আকাঙ্ক্ষার বাইরে কোন সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া হবে না। তিনি দাবি করেন সরকারকে প্রত্যেক নিহত পরিবারকে ১ কোটি করে টাকা দিতে হবে, আহত প্রত্যেককে ৫০ হাজার করে টাকা দিতে হবে। এবং প্রত্যেক পরিবার থেকে উপযুক্ত সদস্যদের সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। শুধু তাই নয় ভূয়া মুক্তি যোদ্ধাদের বাদ দিয়ে ২৪ এর মুক্তি যোদ্ধাদের ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে। 

ছাত্র নেতা জনাব মোঃ রবিউল ইসলাম আরও বলেন, উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন আপনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা নন, আপনি বর্তমান বিপ্লবী সরকারের উপদেষ্টা একথা ভুলে গেলে চলবে না, শতশত ছাত্র জনতার বুকে গুলি চালিয়ে খুনি হাসিনা দেশ ত্যাগ করেছে। তাদের বিচার নিশ্চিত করা আপনাদের দায়িত্ব। আওয়ামী লীগ কে পুনর্বাসনের দায়িত্ব আপনাদের দেয়া হয়নি। তাই কথা বলার সময় হিসাব করে বলবেন। এতই যদি দরদ লাগে তাহলে সরকার থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। 

তিনি আরও বলেন,  বাংলাদেশের অনেক সমস্যার মধ্যে মাদক একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। এই সর্বনাশা মাদকের ছোবল থেকে আমাদের তরুণ ছাত্র সমাজকে বাচাতে হবে। তাই মাদকের বিরুদ্ধে আরেকটি যুদ্ধে নামতে বীর ছাত্র সমাজকে  আহবান জানান। 

তিনি চলমান আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছে তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং যারা আহত হয়ে এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাদের আশু সুস্থথা কামনা করেন, এবং চিকিৎসার খরচ বহন করতে সরকারের কাছে জোর দাবি করেন। একই অনুষ্ঠান সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেখানে এনায়েতপুর থানা জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডাঃ সেলিম রেজা বলেন, জুলাই বিপ্লবে খুনি হাসিনার নির্দেশে গুলি চালিয়ে ছাত্র জনতাকে নির্মমভাবে হত্যাকরেছে। এর দায় দল হিসেবে আওয়ামী লীগ কখনো এড়াতে পারে না। 

তাই সন্ত্রাসী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ কে নিষিদ্ধ করতে হবে। সভ্যসমাজে এরকম হিন্স্র সন্ত্রাসী দলের রাজনীতি করার কোন অধিক নেই। মানুষ এবং আওয়ামী লীগ একসাথে সহাবস্থান করতে পারে না। পরিশেষে তিনি নিহত ছাত্র দের শাহাদাৎ এর মর্যাদার জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেন এবং আহতদের আশু সুস্থথার জন্য দোয়া করেন